নোবেল পুরস্কার-কাণ্ড নিয়ে উপন্যাস

অ+ অ-

 

লেখক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী প্রণীত দুর্দানা খানের চিঠি শিরোনামে উপন্যাসটি প্রকাশ করেছে কথা প্রকাশ। বাংলা ভাষায় চিঠিপত্র সংকলিত উপন্যাসের নজির থাকলেও বাংলাদেশে এমন উপন্যাস নেই বললে চলে। সেই ক্ষেত্রে ফয়জুল লতিফ চৌধুরী প্রণীত উপন্যাসটি অভিনব। ২০২২ সালে প্রকাশিত উপন্যাসে দেখা যায়, ২০২৫ সালে নোবেল প্রাইজ প্রাপ্তিকে কেন্দ্র করে উপন্যাসের কাহিনির সূত্রপাত। কল্পনার সঙ্গে কাহিনির  সংগঠিত অভিনব ঘটনার মিশেলে উপন্যাসে এমন এক পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন, যেন নোবেল পুরস্কারের পর দেশে-বিদেশে, মিডিয়া-সমাজে এমন দৃশ্যপট অমূলক নয়। ঘটনার সত্য-মিথ্যার বিষয় নয়, কল্পনার সঙ্গে অবাস্তব দশার পরিপ্রেক্ষিতে বাস্তবে কী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়, তার বেহতর নজির দুর্দানা খানের চিঠি উপন্যাসটি।   

চৌধুরী প্রণীত উপন্যাসে দেখা যায়, সাহিত্যে নোবের পুরস্কার ঘোষিত হয়েছে ২০২৫ সালের ৯ অক্টোবর। পুরস্কার পেয়েছেন নিউইয়র্ক প্রবাসী বাঙালি লেখক হুমায়ুন আহমেদ। নায়কের পুরস্কার প্রাপ্তিতে দীর্ঘদিনের অভিমান ভেঙে প্রথম স্ত্রী দুর্দানা খান চিঠি লিখেছেন হুমায়ুন আহমেদকে। কিন্তু দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিন ইয়াসমিন পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না। মূলত একজন ঔপন্যাসিকের নোবেল পাওয়াকে কেন্দ্র করে দেশি-বিদেশি ঘটনার পাশাপাশি আছে পরিবারের প্রেম-দ্বন্দ্ব-বিচ্ছেদ। প্রখম স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ, দ্বিতীয় স্ত্রী মার্কিন দেশে গমন মনে হবে কাকতালীয় নয়। নানা মহাদেশ থেকে নানাজনের লিখিত আসা চিঠিগুলো পড়লে মনে হবে, এমন কাণ্ড সত্যিই ঘটেছে। কাল্পনিক ডক্যুফিকশান ধাচের এই উপন্যাস পড়লে পাঠক কিছুটা হোঁচট খাবেন—এটা কি বাস্তবের লেখক হুমায়ুন আহমেদ? নাকি অন্য কেউ?

উপন্যাসটির শুরু হয় ১০ অক্টোবরের চিঠি দিয়ে, সমাপ্তি ঘটে ১২ ডিসেম্বরের হুমায়ুন আহমেদের নোবেল পুরস্কার অনুষ্ঠান ও পরের পারিবারিক ঘটনার কাহিনি দিয়ে। লেখক সহজ হস্তে ব্যবহার করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জীবনানন্দ দাশসহ দেশি-বিদেশি সাহিত্যিকদের সৃষ্ট নানা উপাদান। সব মিলিয়ে বইটি পাঠককে আনন্দকে দেবে, কিন্তু শেষের বিচ্ছেদটা রবি ঠাকুরের শেষের কবিতাকে মনে করিয়ে দেবে। চিঠি আর ভেতরের বিবরণ বৈঠকি ধাচের। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন আনিসুজ্জামান সোহেল। মূল্য রাখা হয়েছে ৩০০ টাকা।