যুদ্ধ শেষে ও অন্যান্য কবিতা
প্রভু
প্রভু—প্রার্থনায় আর হবো না মশগুল
প্রভু—ভুলে যাবো তোমার সমস্ত স্তুতি
পূজা দেবো না; ক্ষুধায় কাঁতরাবে তুমি
মুখ থেকে মুছে যাবে চোরাগুপ্তা হাসি।
যন্ত্রণায় যদি খুলে চোখ—আসিও নেমে
তোমাকে নিয়ে যাবো মাঠে, ফলাব শষ্য
অবসরে পারলে পড়িও নিজের বাণীগ্রন্থ
যা কিছু বলেছিলে শীতল ছায়াতলে বসে
প্রভু—তার কিছু কেটেকুটে ঠিক করে দিও।
বিড়াল
বিড়ালেরা কখনও সমাধানে আসে না
তারা পুনর্বার মাছের কাটার কাছে যায়
দুধের বাটি থেকে বারবার জিহ্বা মুছে
সুযোগ পেলে তোমার বুকে ঘুমিয়ে পড়ে।
ইঁদুর কি তারা আদৌ ধরে? দেখিনি কভু
এই মিথই যেন বিড়ালের দুধের ফয়সালা।
আমাকে বলো, সঙ্গ দেওয়া ছাড়া কুকুর
বিড়াল, এমনকি পাখিরা কোন উপকারে
আসে! মানুষ যা দিতে পারে না তোমাকে!
শরতে
তারপর বলো, কী চমৎকার শরৎকাল এলো
শুক্রবার বটে আজ, নগরে হয়তো একটু বেশি
ডাকবে যাবতীয় পাখি। এমনকি বাতাস ঢের
খুশি মনে বয়ে যাবে প্রতিটি নিঃসঙ্গ জানলায়।
কী চমৎকার শরৎকাল এসেছে এবার! শোনাও
ওসব গল্প। দুপুরের খাবারে পারলে রাখিও
কাশফুলের ভর্তা; জার ভর্তি আমড়ার আচার।
এসব চমৎকার শরতে শিকারে যাওয়া ভালো
নিদেনপক্ষে ঘুরতে গেলে বন্দুকটা সঙ্গে নিও।
ছুটি
তোমাদের ছুটি, তোমরা চলেছো পাহাড়ে
নদী পাড়ে বসে ভাঙছো ঢেউ; প্রেমিকের
বাহুতে হাত গলিয়ে ভাবছো প্রকৃতির কথা
সমুদ্র আর সূর্যাস্তের তলে এই হিম সন্ধ্যায়
জীবনবোধ ধেয়ে আসছে তোমাদের দিকে।
আমার ছুটি নেই; যাওয়া হচ্ছে না কোথাও
অরণ্যে ফেলা হচ্ছে না তাঁবু আগের মতোন।
যুদ্ধ শেষে
তোমার সৈন্যরা আজ চলে যাচ্ছে
ময়দানে পড়ে আছে তলোয়ার ও
ভাঙা নাক। পতাকার পাশে বসন্ত
কেন যে এত লাল নিয়ে আসে রোজ!
পানশালাভর্তি গোলন্দাজদের গান
ক্যাপ্টেন জোন্স, তোমার বিধ্বস্ত দালান
জুড়ে বুলেটের ক্ষত ও পাখিদের বিষ্ঠা
বন্দর থেকে জাহাজের গর্জন আর আলো
এসে পড়ছে নিঃসঙ্গ এই পাহাড়ের গায়ে
এমনকী কেঁপে কেঁপে উঠছে একটি ঘাস
কয়েকটা কাটা লাশ কথা বলছে পরস্পরে।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন