যাত্রাপথ ও অন্যান্য কবিতা

অ+ অ-

 

যাত্রাপথ

গিঁটে গিঁটে ভরিয়ে রেখেছ
পথ
সেখানে কমললোচন 
পিটপিট,
তারও চোখে উড়ো ধূলিকণা
চালেডালে আনন্দ পিকনিক।

অকেজো ফিল্টার,
ছাকনিতে শায়িত যত কুচোকাচা মায়া
ব্যাথা পায়ে
             গিঁট খোলা—

শ্রীচরণে, দ্যাখ, তোমারই স্বজন।

 

সাক্ষাৎকার

সে প্রতিমা কেউ না
একান্ত অন্যের—

স্মৃতিকে ডুবিয়ে গঙ্গা জলে
ভাসায়,
শরম শাড়িতে জড়িয়ে
একা স্কুলে যায়; 
সুখের সংসার তার গনগনে আঁচ
নিত্য কাটাকুটি, কথা ও আনাজ।

হাতে-পায়ে শ্লথ গতি
দেহ মনে গোপন বিস্তার
চোখ ঠেরে দিগন্ত এনেছে টেনে ঘরে—
দিঘি জলে তারও আঁখি জল,

পোড়ে বটে— 
কিছু তো গলে না দেহ ছাড়া।

 

প্রাত্যহিকী

সেই ঘটিবাটি, থালা ও বাসন
গোপালের মা চূড়িহীন হাতে
                   ঠূন্ঠুন—
দেখেশুনে খুলে যায় ভুতের নয়ন;
তাদেরও ভারি লোভ—দিনান্তে দু-মুঠো।

নাড়ু গোপাল বাবাটি—
                   ঘোরে মাঠেঘাটে।
মাল তোলে, তেল মাখে, স্নানে নেমে বোঝে
পুকুরে কী গভীর স্রোত।

পড়শিরা গল্প শোনে, ঝুঁকে। 

 

অবধ্য 

এই যে বিপণিবীথি 
কোথাও বিথারে আট, কোথাও বিতত দশ
দিবসরজনী ভিয়েনে গড়ায় রস।

আদি ও অনন্ত বৃত্তে সাধকসাধিকা 
বীথিপথে দ্রাব্য ও দ্রব
চরণে অলক্ত চিহ্ন আঁকে সুরসিকা।

তাহাকে বলিও, জল  
স্থির নহে,
গতরাত্রে মূর্ছা গিয়াছে সে পাত্রটি রাখিয়া। 

 

আনন্দ ভবন

কবেকার নৌকো
সে-ও ডুবে ডুবে খায় জল
আর ভাবে, মীন সাথে
বিশ্ব ভ্রমণে যাবে একদিন—

রাধিকা এপারে বসে একা।

ও তপন, ধনুক নামাও, দেখ,
ঝিকমিক রাত্রির চাঁদ
ঘাটে বসে নিরুপায়—
পাখি পরিযায়ী।

পেয়েছি, পেয়েছি বলে
চিন্ময় আনন্দে ঝাঁপ,
                   গুড়াপের জলে। 

 

কাছে দূরে

বড়শি থেকে দূরে
তবু ফাৎনা ডুবুডুবু
থেকে থেকে প্রার্থনা, ও মনোরম,
শোন ধ্বনি, যে থাকে দূরের থেকে দূরে
শব্দের মহিমা ঘিরে উৎসুক—

খুঁজছ তাকেই সিন্ধুপারে! 

ওই তো গজলডোবা
দূরের থেকেও কাছে…