আশানুর রহমানের প্রথম উপন্যাস ‘লেনিন’
ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিনের মৃত্যুর পরে রুশ সাহিত্যিক মাক্সিম গোর্কি আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘লেনিনের মনোজগত নিয়ে কেউ যদি একটা ফিকশন লিখতে পারত!’ অবশ্য তাকে নিয়ে ব্রিটিশ সাংবাদিক অ্যালান ব্রায়েন লিখেছিলেন একটি উপন্যাস, নাম—‘লেনিন: দ্য নভেল’। গেল শতাব্দির নব্বই দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙনের পর দুই দশক পর এখন রুশ বিপ্লবের নায়ক ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিন বাংলাদেশে তুলনামূলক কম আলোচিত এক ঐতিহাসিক চরিত্র। কিন্তু পুরো বিংশ শতাব্দি জুড়ে দেশে দেশে লেনিনের প্রভাব ছিল অবিস্বরণীয়। ঐতিহাসিক এই কিংবদন্তি নায়ককে নিয়ে এবার বাংলায় উপন্যাস লিখেছেন আশানুর রহমান। ‘লেনিন’ লেখকের প্রথম উপন্যাস। বইটি প্রকাশ করেছে কথা প্রকাশ।
উপন্যাসে আছে—বালক ভ্লাদিমিরের লেনিন হয়ে ওঠার গল্প যেন একদিকে রুশ ইতিহাসের আলোড়ন, অন্যদিকে উলিয়ানভ পরিবারের একটানা বিয়োগান্তক কাহিনি। ইতিহাসের কামারশালার আগুনে আর পারিবারিক শোকগাঁথায় গড়ে ওঠে লেনিনের মন। জারের হাতে বিপ্লবী বড় ভাই সাশা-র মৃত্যু কিশোর লেনিনকে দেখিয়ে দেয় জীবনের দিশা। সেই জীবনে প্রেম আসে নাদিয়া ও ইনেসার আকর্ষণ নিয়ে। ভালবাসার আহ্বান ছিল ইয়াসনেভা ও এলিজাবেতের কাছ থেকেও। কিন্তু লেনিন যেন কাছে থেকেও দূরে, দূরে থেকেও অন্তর্গত রক্তের ভেতরে। শুধু প্রেমে নয়, বন্ধুত্বেও লেনিন যেন অধরা থেকে যায় ঘনিষ্ঠ সহযোদ্ধাদের কাছে। শ্রমিকের সঙ্গে তিনি শ্রমিক, অরণ্যে শিকারি, প্যারিসের আড্ডায় তুখোড় বুদ্ধিজীবী আর ব্রিটিশ মিউজিয়মের নির্জনতায় এক আচ্ছন্ন পাঠক।
উপন্যাসে ইউরোপের ভূগোল জুড়ে লেনিনের চলাচল। সাইবেরিয়ার বরফজীবনের নির্বাসন থেকে সুইজারল্যান্ড, লন্ডন, প্যারিস, ব্রাসেলস আর পুরো রাশিয়াজুড়ে ছড়ানো তার কক্ষপথ। কখনো মনে হয় তিনি নিষ্ঠুর, কখনো বিষাদময় ও নিঃসঙ্গ। ইনেসাকে কবরে শুইয়ে কাঁদছেন লেনিন। এই লেনিনই তো পিটার্সবার্গের ক্ষমতা দখলের আগে ও পরে শান্ত—যেন বিপ্লবের রেলগাড়িটার বিজ্ঞ চালক। ইতিহাসের শীতল বরফে মোড়ানো লেনিনের কঠিন ব্যক্তিত্বের তলায় যে উষ্ণ জীবনস্রোত–এই উপন্যাস তারই নিবিড় বয়ান।
সমাজ বদলের স্বপ্নে বিভোর লেখক আশানুর রহমান একসময় একজন সক্রিয় বামপন্থি রাজনৈতিক কর্মী ছিলেন। জীবনীভিত্তিক উপন্যাস নির্মাণে লেখক আদর্শের নায়ক ‘লেনিন’কে নিয়ে জানা-বোঝা, সংগ্রাম থেকে ইতিহাস পাঠ আর কল্পনা থেকে অনন্য এক চরিত্র হাজির করেছেন। নিঃসন্দেহে বাংলাদেশে বামপন্থি আন্দোলনের নিস্তরঙ্গ সময়ে বইটি নতুন করে লেনিনকে নিয়ে ভাববার অবকাশ সৃষ্টি করবে। ‘লেনিন’ উপন্যাসটির প্রচ্ছদ করেছেন মেহেদী হাসান। বইটির মুদ্রিত মূল্য ৬০০ টাকা।
মার্কসবাদ, লেলিনবাদ সর্বহারার মতবাদ। শিক্ষা শেষে কাজ দাও, নইলে বেকার ভাতা দাও। এরকম স্লোগানে মুখরিত ছিল 90 এর দশক। তখন কলেজে পড়ুয়া এই আমি বা আমরা কলেজ ক্যাম্পাসের প্রতিটি মিছিলে ছিলাম দামাল, উদ্দাম। সমাজতন্ত্র, সাম্যবাদ, সমতা, সুনীতি, সামাজিক সংস্কার, মস্তিষ্কের কোষে কোষে গিয়েছিল সেটে, মানসিক সংগঠনও তৈরি হয় সেইভাবে। সেই ছোট্ট বয়সে সুযোগ হয়েছিল কমরেড শান্তি বিশ্বাস ( আমার দাদু, জেলা : ভোলা) , কমরেড নলিনী দাস, কমরেড মমতাজ, কমরেড ফরহাদ ( পত্রিকা পড়ে ) এদের সংস্পর্শ ও সাহচর্য, আর তাই মানসিক ছাচ তৈরি হয় খুবই সাবলীল, মানবিক এবং সুশীল সমাজ বিনির্মাণের তীব্র বাসনায়। শুরু হলো কাল মার্কস, লেনিন, ফয়ের বাখ, হেগেল নিয়ে অল্প বিস্তর পড়াশোনা। ঐতিহাসিক বস্তুবাদ, দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ, বেসিক স্ট্রাকচার, সুপার স্ট্রাকচার বুঝবার চেষ্টা। হয়তো অল্প কিছু বুঝেছি, হয়তো বুঝি নাই কিন্তু মানস মনে একটা আকাঙ্ক্ষা এখনো আছে - সম্পদের সুষম বন্টন সম্পন্ন একটি রাষ্ট্র কাঠামো, মুক্ত, বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পন্ন একটি সাংস্কৃতিক জাগরণ। ১৯৯০ সালে সমাজতন্ত্রের পতনে চিন্তার রাজ্য নড়বড়ে হয়ে যায়, ভেঙে যায় ন্যাটো, ওয়ার'স জোট, ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে পুরো পৃথিবী। পুঁজিতন্ত্রের জয়জয়কার। চিন্তাগুলি হয়ে যায় বিক্ষিপ্ত, সাম্যবাদ ও সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী মানুষ গুলি হয়ে যায় একা। তারপরেও প্রাণান্তকর চেষ্টা সমাজ বদলে সমাজতান্ত্রিক চেতনায় নিজের চিন্তাগুলোকে বুনন করা একান্তই নিজের মতো করে। ইদানিং কালে সমাজতন্ত্র চেতনায় বিশ্বাসী লোকগুলি একটু অন্যভাবে বিবেচিত পুঁজিবাদে বিশ্বাসী লোকজনদের দ্বারা। বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম প্রধান একটি স্তম্ভ সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা। কিন্তু ভেসে গেছে সব সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনে। আদর্শিক মানুষগুলি হয়ে গেছে প্রাণহীন, আবার অনেকে হয়ে গেছে অতি বাম থেকে অতি ডান। পিনাকি ছড়াচ্ছে প্যানিক~~~~~~~~ প্যারাডাইম শিফট হয়েছে অনেকের চিন্তার চিন্তনে। ভোগবাদের কবলে সবল হয়েছে অনেক ভিন্ন চিন্তার মানুষগুলি। দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে হয়তো, কিন্তু মানসিক বিকাশ হয়নি প্রত্যাশিত উপায়ে, তবে বেড়েছে মানসিক কোষ্টকাঠিন্যতা। এরকম একটি সময়ে সম্মানিত আশানুর স্যারের লেনিন উপন্যাসটি মস্তিষ্কের কোষগুলিকে স্টিমুলেন্ট করবে এবং সেই স্টিমুলেশন থেকে হয়তো একটু রেসপন্স তৈরি করবে। এরকম একটি যুগান্তকারী ও সময়োপযোগী উপন্যাস পড়ার তীব্র আবেগে উত্তেজিত আছি। আশা রাখি লেনিন উপন্যাসটি পাঠক জনপ্রিয়তা পাবে এবং বাংলাদেশে এ যাবৎ কালের বেস্ট সেলার একটি উপন্যাস হবে। উপন্যাসের রচয়িতা সম্মানিত আশানুর স্যারের দীর্ঘায়ু কামনা করছি সেই সাথে রক্তিম শুভেচ্ছা প্রকাশক কে। প্রকৃতি যেন উপন্যাসের জনক স্যারকে এরকম আরো উপন্যাস উপহার দিয়ে আমাদের কে আরো সমৃদ্ধ করার তৌফিক দান করে।
বিপ্লব দাস
জানুয়ারি ১৭, ২০২৪ ২৩:২৪
মার্কসবাদ, লেলিনবাদ সর্বহারার মতবাদ। শিক্ষা শেষে কাজ দাও, নইলে বেকার ভাতা দাও। এরকম স্লোগানে মুখরিত ছিল 90 এর দশক। তখন কলেজে পড়ুয়া এই আমি বা আমরা কলেজ ক্যাম্পাসের প্রতিটি মিছিলে ছিলাম দামাল, উদ্দাম। সমাজতন্ত্র, সাম্যবাদ, সমতা, সুনীতি, সামাজিক সংস্কার, মস্তিষ্কের কোষে কোষে গিয়েছিল সেটে, মানসিক সংগঠনও তৈরি হয় সেইভাবে। সেই ছোট্ট বয়সে সুযোগ হয়েছিল কমরেড শান্তি বিশ্বাস ( আমার দাদু, জেলা : ভোলা) , কমরেড নলিনী দাস, কমরেড মমতাজ, কমরেড ফরহাদ ( পত্রিকা পড়ে ) এদের সংস্পর্শ ও সাহচর্য, আর তাই মানসিক ছাচ তৈরি হয় খুবই সাবলীল, মানবিক এবং সুশীল সমাজ বিনির্মাণের তীব্র বাসনায়। শুরু হলো কাল মার্কস, লেনিন, ফয়ের বাখ, হেগেল নিয়ে অল্প বিস্তর পড়াশোনা। ঐতিহাসিক বস্তুবাদ, দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ, বেসিক স্ট্রাকচার, সুপার স্ট্রাকচার বুঝবার চেষ্টা। হয়তো অল্প কিছু বুঝেছি, হয়তো বুঝি নাই কিন্তু মানস মনে একটা আকাঙ্ক্ষা এখনো আছে - সম্পদের সুষম বন্টন সম্পন্ন একটি রাষ্ট্র কাঠামো, মুক্ত, বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পন্ন একটি সাংস্কৃতিক জাগরণ। ১৯৯০ সালে সমাজতন্ত্রের পতনে চিন্তার রাজ্য নড়বড়ে হয়ে যায়, ভেঙে যায় ন্যাটো, ওয়ার'স জোট, ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে পুরো পৃথিবী। পুঁজিতন্ত্রের জয়জয়কার। চিন্তাগুলি হয়ে যায় বিক্ষিপ্ত, সাম্যবাদ ও সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী মানুষ গুলি হয়ে যায় একা। তারপরেও প্রাণান্তকর চেষ্টা সমাজ বদলে সমাজতান্ত্রিক চেতনায় নিজের চিন্তাগুলোকে বুনন করা একান্তই নিজের মতো করে। ইদানিং কালে সমাজতন্ত্র চেতনায় বিশ্বাসী লোকগুলি একটু অন্যভাবে বিবেচিত পুঁজিবাদে বিশ্বাসী লোকজনদের দ্বারা। বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম প্রধান একটি স্তম্ভ সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা। কিন্তু ভেসে গেছে সব সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনে। আদর্শিক মানুষগুলি হয়ে গেছে প্রাণহীন, আবার অনেকে হয়ে গেছে অতি বাম থেকে অতি ডান। পিনাকি ছড়াচ্ছে প্যানিক~~~~~~~~ প্যারাডাইম শিফট হয়েছে অনেকের চিন্তার চিন্তনে। ভোগবাদের কবলে সবল হয়েছে অনেক ভিন্ন চিন্তার মানুষগুলি। দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে হয়তো, কিন্তু মানসিক বিকাশ হয়নি প্রত্যাশিত উপায়ে, তবে বেড়েছে মানসিক কোষ্টকাঠিন্যতা। এরকম একটি সময়ে সম্মানিত আশানুর স্যারের লেনিন উপন্যাসটি মস্তিষ্কের কোষগুলিকে স্টিমুলেন্ট করবে এবং সেই স্টিমুলেশন থেকে হয়তো একটু রেসপন্স তৈরি করবে। এরকম একটি যুগান্তকারী ও সময়োপযোগী উপন্যাস পড়ার তীব্র আবেগে উত্তেজিত আছি। আশা রাখি লেনিন উপন্যাসটি পাঠক জনপ্রিয়তা পাবে এবং বাংলাদেশে এ যাবৎ কালের বেস্ট সেলার একটি উপন্যাস হবে। উপন্যাসের রচয়িতা সম্মানিত আশানুর স্যারের দীর্ঘায়ু কামনা করছি সেই সাথে রক্তিম শুভেচ্ছা প্রকাশক কে। প্রকৃতি যেন উপন্যাসের জনক স্যারকে এরকম আরো উপন্যাস উপহার দিয়ে আমাদের কে আরো সমৃদ্ধ করার তৌফিক দান করে।
বিপ্লব দাস
জানুয়ারি ১৭, ২০২৪ ২৩:১৭