হে জুলাই তুমি জেগে থাকো

অ+ অ-


[জুলাইয়ের শহিদদের স্মরণে]

আর আমি রাখবো না চোখ 
বাংলার পথে ঘাটে
মাটিতে, সবুজ ঘাসে ভেজাবো না বুক আর।
উঠানে শালিক হাঁটলে তাকাবে না দুই চোখ
চড়ুইয়েরা আর কোনদিন 
বাঁধবে না ঘর বাংলায়

পদ্মা নয়, মেঘনা নয়
বুক ছিঁড়ে নদী আসে নেমে
আসে লাল লোহিতের স্রোত
কোনদিন নীলাকাশ আর
ছড়াবে না নীল এ ফেনারক্তের কালে
মায়ের কোলে মরে পরে আছে দ্যাখো
নিজের কোলের ছেলে

মৃত্যুসাঁটা চোখের উপর
কোনোা রূপ জাগে না বাংলার আকাশের
হুতাশনে জ্বলে ওঠে
এই মাটি-ঘর, সকল শহর বেহিসেবি বিনাশের

বুলেটবিদ্ধ কাজলনয়ন
মানুষের, শিশুদের রক্তে আটকে থাকে
জুলাই জেগেছে মহাকালের অনেক গভীর থেকে
পথে পথে নগরী ও মহল্লাতে

জুলাই গড়িয়ে পড়ে জুলাইয়েরই বুকে
সে যায় না আর কোথাও
গোরস্থানের ভীড়ে
এইখানে জুলাই বসে থাকে ঠাঁই 
শহিদের পাহারায়।

বাংলায় আর ঋতু নেই কোনো
কোনো শীত বা বসন্ত
নেই কোনো পলাশ মল্লিকা মাস
রক্ত ঋতুতে থেমেছে নদীমাতৃকা আমার
দেখো গুম হয়ে থাকা বেওয়ারিশ সব লাশ

জুলাই গড়িয়ে জুলাইয়েই থাকে।

আমাদের এগুতে হবে না একটুও
এগুলো মানে যদি হয় তোমার জিডিপির বর্ধন
সেই জিডিপির যাদু তুমি খাও
ফেরি করো বিশ্বময়
আমাদের যেতে হবে না কোথাও
দ্রুতগামী রেলের বগিতে বসে
পাঁজাকোলা করে মৃত্যু
যেতে হবে না কোথাও

কারণ লাশেরা নড়ে না।

কারণ আমাদের চোখে রক্তজামা জাপটে ধরা
কারণ আমাদের কোনোই স্বপ্ন নেই 
হাজার কোটির 
শত শত কোটি
রাজপ্রাসাদের
চিরকালের বন্দোবস্তের
স্বপ্ন নেই কোনোই
হে বন্দুকবিধাতা! 

আমার নিশ্চয়ই যাবার নেই কোথাও
কারণ লাশেরা নড়ে না।
তাই ধোঁয়াটে আকাশ থেকে বুলেট ছোঁড়ো
চোখে মুখে
চারদিক থেকে
বেশুমার বুলেট
ছুঁড়তেই থাক
উড়ে যাক চোখ
শিশুর মগজ
ট্রাক থেকে টেনে নামাও 
আলামিনের লাশ
শতশত কোটি কোটি বুলেটের মালিক তুমি
হে মালিকান
ছোঁড়ো বুলেট
আমার যাবার কোন জায়গা নেই
কারণ লাশেরা নড়ে না।

তাই আমি বসে আছি
জুলাইয়ের বুকে
লাশ হয়ে সহস্র লাশের পাশে
তোমার সবগুলো বুলেট খেয়ে ফেলবো বলে।

হে জুলাই তুমি জেগে থাকো।