অপরাধ ও অন্যান্য কবিতা

অ+ অ-

 

অপরাধ

তুমি অপরাধী
গীতিকথা অপরাধসীমা ছুঁয়ে আছে

এই মুখ পদ্মপাতার রূপে ভাসে

সমুদ্রতৃষ্ণা নিয়ে এপার আর ওপার ভেঙে  
গীত হতে থাকে নদী, দেখি
স্থলে আমি বৃথা অপরাধী
তোমার পায়ের নখে শত জলপরি
অপরাধসীমা ছুঁয়ে আছে
 
এই পাতা, এই মুখ এখনো জানে না
এখানে, ভাটির দেশে, কে যে অপরাধী

 

বহ্ন্যুৎসব

খনার জিহ্বা তারা পুড়াতে এসেছে আজ দল বেঁধে কোজাগর রাতে। এই বহ্ন্যুৎসবে আমরা সবাই বসেছি নীরবে।

লোহার বস্ত্র গায়ে, দৃশ্যে দৃশ্যে ছিল অবিরোধআজ সব বিরূপতা আজিব গানের কাছে অর্থহীন হয়েছে সহজে। এই গল্প পত্রে পত্রে, মাটি-জলে, শোনা যাচ্ছে আকাশে-বাতাসে, দোতারা-সেতারা শুনি সুকোমল বাজে!

এখানে বহ্ন্যুৎসব, আর সবাই অনঙ্গ, নীরব। অশরীর দ্রষ্টা তবু ক্রুদ্ধ, বিচলিত।

 

দ্বিবাচক

সে যে নদীর মধ্যে নাও
সেতুর পাশে খাড়া
দেখে নদীতে গিয়েছি, তবু 
পেলাম না যে সাড়া

সেতু নীরবে হাসছে. সেতু
রূপে ও বিদ্রুপে, তাহার
দুহাতে ফুল, দু-পায়ে এক 
আজিব উপহার 

 

মনচিঠি

বাক্সে ফেলেছি কবে, এলোবর্ণে, প্রাচীন নিয়মে; আমি জানি এই চিঠি কোনোদিন কারো হাতে যাবে। নাগরী-হরফে-লেখা চিঠিখানি গূঢ়খামে ঢাকা, তার গায়ে লেগে আছে সোনা-রূপা জল। ভালো হয়, এই চিঠি শেষমেশ কারও হাতে গেলে; প্রাপিকা বৈদেশি হলে অতীব উত্তম, এলো আর মেলোবর্ণ প্রাণ পায় অশ্রুভেজা চোখ পড়ে নিলে।

সযত্নে লিখেছি বটে, তবু এ মনের চিঠি, ভাবি আমি, শেষমেশ কারও যেন সংসারে না লাগে। এমন সংশয় হলে, শারদ-মেঘের চিঠি বাক্সে রয়ে যাবে, নিবিড় রসিকা পেলে কোনোদিন পৌঁছে যাবে প্রাণের খোয়াব।