সাহিত্যের উপরিতলের কথামালা

অ+ অ-

 

সম্প্রতি বেঙ্গল পাবলিকেশন প্রকাশ করেছে কথাকার পাপড়ি রহমানের আত্মজীবনী একলা পথের সাথী। বাংলাদেশে সাধারণত এমন বয়সে আত্মজীবনী লেখার চল নেই বললে চলে, তবে পাপড়ি সেই ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। কারণ এখানে আত্মচরিত লেখার চল লেখকের পড়ন্ত বেলায়। বইতে তিনি সাহিত্যিক হয়ে ওঠার সময়কে আশ্রয় করেছেন। শুরু করেছেন এভাবেইসাহিত্য করতে আসা মানে অন্ধকারে ঝাপ দেওয়া। লেখক তার সময়কে কিভাবে জেনেছেন, কিভাবে দেখেছেন, কিভাবে বুঝেছেন, নিজে কিভাবে এই সাহিত্য সমাজে বিচরণ করেছেন, তার একটা গাল্পিকরূপ এই বইতে পাওয়া যাবে। বইটির মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছেচেনাজানা সাহিত্য পরিসরকে লেখক নিজের মতো করে তুলে এনেছেন।

একলা পথের সাথী বইয়ে লেখক তার চারপাশের জগতকে কখনো আঁকড়ে থেকেছেন, কখনো হতাশ হয়ে ছেড়ে দিয়েছেন, তখনো উৎরে যেতে চেষ্টা করেছেন, কখনো নিষ্ঠুরভাবে সমালোচনা করেছেন। বইটির ব্লার্বে বলা হয়েছে, ‘একটি মহিমান্বিত গীবতের বইআরও বলা হয়েছে, ঈর্ষা, বিদ্বেষ, তিরস্কার, অসহসোগিতা, অপ্রাপ্তি ও মানসিক নিপীড়নের শিকার হয়েছেন তিনি।মূলত একজন লেখকের কথাকার হয়ে ওঠার পথ কত যে পিচ্ছিল সেসব ঘটনার বয়ান করেছেন তিনি। এই বইয়ের পরিমণ্ডলের চরিত্রগুলো সাহিত্যেরই মানুষজন। কখনো কখনো এসেছে নিজ পরিবার ও অলেখক পরিজনের কথা।

নব্বইয়ের দশক থেকে শুরু হয়ে বইটি শেষ হয়েছে হাল-আমল নাগাদ। বাংলাদেশের সাহিত্য সমাজের সংস্কৃতির জগৎ কেমন, তা এই বই পড়লে কিছুটা টের পাওয়া যায়। জীবন এমন নয় যে সবকিছু সোজা ও সমান্তরাল গতিতে চলবে। সেই ক্ষেত্রে পাপড়ি নিজেকে কেন্দ্রে রেখে তার চারপাশটার কথা লিখেছেন। অন্যরা তাকে কিভাবে মূল্যায়ন করেছেন সেটাও বইয়ে উল্লেখ করেছেন। বইয়ের আবেগের তারল্য বাদ দিলে একথা স্পষ্ট—সমকালীন রাজনীতি ও অর্থনৈতিক সংস্কৃতি সম্পর্কে এতে তেমন কোনো বয়ান নেই। তবে বইতে আছে সাহিত্যাশ্রিত সংস্কৃতির রাজনৈতিক বয়ান। যা সাহিত্যের উপরিতলের কথামালা। একলা পথের সাথী বইটির প্রচ্ছদ করেছেন শিল্পী জাফরিন গুলশান। মূল্য রাখা হয়েছে ৫০০ টাকা।