বিনয়ের কবিতায় অমীমাংসিত প্রেম

অ+ অ-

 

ষাটের দশক। দেশভাগের পর এক বিশৃঙ্খল অবস্থা। একদিকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সাথে উদ্বাস্তু কলোনিতে বাড়ছে মানুষের ভিড়, অন্যদিকে স্বরাজের স্বপ্নকে গুঁড়িয়ে চলছে স্বার্থ আর নোংরা রাজনীতির নগ্ন খেলা। ঠিক এই সময় আবির্ভাব ঘটলো একদল তরুণ কবির। এক পাতার বুলেটিনে তারা জীবন, দর্শন, রাজনীতি আর যৌনতা বিষয়ে কবিতা, গদ্য, অনুগল্প আর স্কেচ ছাপালো। তারপর কফি হাউজ, পত্রিকা দপ্তর, কলেজের বাংলা বিভাগ আর লাইব্রেরি গিয়ে বিলি করতে থাকলো হ্যান্ডবিল আকারে। কলকাতার মোড়গুলোতে দাঁড়িয়ে পাঠ করলো তাদের রচনাগুলো। রচনা পাঠের জায়গাকে ঘিরে হাজারো মানুষের ভিড় জমে যায়। রবীন্দ্রনাথ আর জীবনানন্দের ভক্ত বাঙালি এমন ধারার কবিতা আগে শোনেনি। হঠাৎই রাস্তায় বড় বড় মিছিল যায়, ব্যানারে-ফেস্টুনে লেখা থাকে—‘আরও কবিতা পড়ুন’। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে তরুন কবিরা কবিতা আওড়ায়, পাঠক আকৃষ্ট করে। তখন এক তরুন কবি দীপ্ত কণ্ঠে বলেন, আমি এখন যা লিখছি সে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তক। তার মানে ভবিষ্যতে আমার কবিতা ছাত্রছাত্রীরা পড়তে বাধ্য হবে। সেহেতু আমার এখন কোনো পাঠক না হলেও চলবে।
সেইদিনের সেই দীপ্ত কণ্ঠে কথা বলা তরুন কবির নাম বিনয় মজুমদার, ষাটের দশকের বাংলা সাহিত্যের অনন্য সাড়া জাগানিয়া কবি। কালজয়ী ধ্রুপদী কবিতায় যিনি লিখলেন—

একটি উজ্জ্বল মাছ একবার উড়ে
দৃশ্যত সুনীল কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে স্বচ্ছ জলে
পুনরায় ডুবে গেলো—এই স্মিত দৃশ্য দেখে নিয়ে
বেদনার গাঢ় রসে আপক্ক রক্তিম হ’লো ফল।

এ দৃশ্যটির নাম বিনয় মজুমদার নিজেই দেন স্মিত দৃশ্য। খুব উজ্জ্বল বা প্রাণবন্ত কোনো কিছুই স্মিত। প্রাকৃতিকভাবেই দেখা একটি দৃশ্য হয়ে যায় প্রতীকী। এ দৃশ্যটির সঙ্গে প্রথম স্তবকের শেষ পঙক্তিতে ‘বেদনা’র রসকে গাঢ় মনে করে তার সঙ্গে সম্পূর্ণ পেকে খাওয়া ফলের সংযোগ। এটাও কী ভাবা যায়। ফল তো নিজেই এক সময় পেকে যায়। অথচ ঘটা করে কবি তাকে কত গভীর অর্থে বলছেন অন্য কথা। প্রাকৃতিকভাবেও ফল পাকলে ‘রক্তিম’ লাগে। সেটা ঐ উজ্জ্বল মাছটির মতো আলো-আঁধারি খেলা খেলল বিনয়রূপী একজন কবি ও দর্শকের সঙ্গে। অতঃপর ভাবা সঙ্গত হয় প্রেমও এক সময় ভরাট হয় পেকে যাওয়া ফলের মত। আধুনিক কবির এ অন্যদৃষ্টি নিজস্ব কাব্যিক অনুভূতিযুক্ত। পরের স্তবকটি উপরের স্তবকের ‘বেদনা’ বা অমীমাংসিত প্রেমের সম্প্রসারিত ভাবনা। ‘মরাল’ হয়ে যাচ্ছে পলায়নপর অথচ এই মরালও উষ্ণ মাংস আর মেদরূপী এক ধরনের পাখি। তার বিপরীতে সমুদ্রমৎস্যকে অনেক বড় সাক্ষী করেন। সমুদ্রমৎস্য দেখে অসুস্থ বৃক্ষেরা শ্বাসজনিত কষ্টে আছে আর এভাবে সব বৃক্ষ এবং ফুলেরা স্ব স্ব জায়গায় মিলনের কথা ভাবে। সমুদ্রমৎস্যের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্টের কথা বলেননি কবি কেননা তার সে কষ্ট নেই। এই ‘শ্বাসকষ্ট’ অসুস্থ বৃক্ষের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অভাবিত এক মানসবেদনার উৎস হয়। বিনয় মজুমদার প্রেমকে ভিন্নদৃষ্টিতে দেখে সম্পূরক জীবন অনুভূতি তুলে ধরেছেন তাঁর প্রেমের কবিতায় এবং যা কবির লেখায় অমীমাংসিতও বটে।
বিনয় মজুমদার যে তুখোড় মেধাবী, সে বিষয়ে সাধারণ পাঠক হতে বিদগ্ধজন পর্যন্ত—কারোরই কোনো সন্দেহ নেই। ছাত্রজীবন হতে কবিতার ক্লাস—মেধার ছাপ রেখেছেন সবখানে। ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় রেকর্ড নম্বর প্রাপ্তি, এরপর শিবপুর কলেজ থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হলেন। বিদেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক হবার সুযোগ প্রত্যাখ্যান করে শুধু কবিতার আবেদনে রয়ে গেলেন কলকাতায়। কবিতার ময়দানেও শুরুতেই তাকে চিনতে বাধ্য হলো কলকাতার উন্নাসিক সাহিত্যসমাজ। তার ‘ফিরে এসো, চাকা’ বাংলা কবিতার জগতে সৃষ্টি করল এক অদ্ভুত আলোড়ন। তিনি লিখেছেন অনেক নিপাট প্রেমের পদ্য। যেগুলো শুধুই প্রেমের কবিতা নয়। প্রেমের কবিতা তবে সঙ্গে আরও কিছু। অনেকেরই মতো বিনয় মজুমদার গণিতের রসবোধে পুরো একটি কাব্যগ্রন্থ লিখলেন শুধুই প্রেম নিয়ে। কাব্যগ্রন্থের নামেও রয়েছে চমক
‘ফিরে এসো, চাকা’। চাকা আমাদের সভ্যতাকে কতোটা গতিশীল করেছে সে ব্যাপারে নতুন কিছু বলার অবকাশ নেই। চাকা—ভালোবাসাকেও কতোটা জ্বালা কতোটা মুগ্ধতা দিয়েছে বিনয় মজুমদার তার প্রেমের কবিতায় সেকথা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় তুলে ধরেছেন। প্রেম বিনয়ের কবিতায় প্রচলিত ধারার বাইরে নেমে এসেছে। অর্থাৎ প্রেম মানেই কেবল মিলন বা বিচ্ছেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ কোনো বিষয়ের ঘেরাটোপে টানেননি তিনি। তার প্রেমের কাব্যে তিনি অনায়াসেই প্রত্যাখ্যাত হবার মধ্যে যে পরাভবের বোধ থাকে, যে ধিক্কার থাকে তারও উল্লেখ করেছেন এভাবে: ‘আমিও হতাশবোধে, অবক্ষয়ে, ক্ষোভে, ক্লান্ত হয়ে মাটিতে শুয়েছি একা’। আবার লিখেছেন: ‘প্রত্যাখাত প্রেম আজ অসহ ধিক্কারে আ’লীন/ অগ্নি উদ্বমন করে এ গহ্বর ধীরে ধীরে তার/ চারিপাশে বর্তমান পর্বতের প্রাচীর তুলেছে।’
বিনয়ের কবিতা ‘প্রেমিক’কে শূন্যতায় স্থাপন করে। আর তাঁর জীবন ‘মানুষ’কে আতঙ্কিত করে। মগ্নচৈতন্যের এই টানাপোড়েন ধারণ করে বিস্তীর্ণ প্রান্তরে দাঁড়িয়ে থাকেন কোন এক ‘ঈশ্বরী’ বিদ্যুত ঝিলিকের মতো। কিন্তু এতো চরম সত্যই যে, ‘প্রায় সব আয়োজনই হয়ে গেছে, তবু কেবল নির্ভুলভাবে সম্পর্ক স্থাপন করা যায় না এখনো।’ তবু ‘ঈশ্বরী’র জন্য কবিতা রচিত হয়। কিংবা ঈশ্বরী নিজেই তা রচনা করিয়ে নেয়। এই নারী—কোন কোন মানুষের নিঃসঙ্গ ছায়াপথে রানীরঙ নীহারিকারূপ—ঠিক শরীরী নন। অন্য কবিদের প্রেমের কবিতার চেয়ে বিনয়ের কবিতায় ভিন্ন এই বিচ্ছেদবোধের তীব্রতা। ভিন্ন তাঁর চিত্রকল্পে। তাঁর কবিতায় প্রেম অমীমাংসিত তাই একটা গোটা বই [ফিরে এসো, চাকা] একজন ব্যক্তিবিশেষের সঙ্গে বিচ্ছেদের তীব্রতায় কবিতা হয়ে উঠেছে। সেই বিচ্ছেদ কিংবা প্রেম অমীমাংসিত কেননা চাকা হচ্ছে চক্রবর্তীর অপভ্রংশ। এই কবিতামালা গায়ত্রী চক্রবর্তী নামের একজন রক্ত-মাংসের সত্তার উদ্দেশে রচিত বলে কবি একসময় দাবি করতেন। কিন্তু পরে দেখা গেলো অন্য নামও উৎসর্গে ব্যবহার করেছেন, এবং শেষ পর্যন্ত বিচ্ছেদ প্রকৃতপক্ষে কার সঙ্গে তা পরিবর্তিত নামেই স্পষ্ট ঈশ্বরীর সঙ্গে, অর্থাৎ প্রেম তারপর বিচ্ছেদ এবং শেষে অমীমাংসিত সেই প্রেমকাহিনী!
বিনয় মজুমদারের প্রেমের কবিতায় আর একটি দিক খুব তীব্রভাবে চোখে পড়ে, কবির বিচ্ছেদবোধ ধীরে ধীরে তীব্র হতে হতে কখনো কখনো বিলাপে রূপ নিচ্ছে কিংবা পরিণত হয়েছে প্রকৃতির সাথে প্রতিদ্বন্দ্বে বা ঘৃণায়। এই বিচ্ছেদানুভূতি গভীরভাবে পাঠ করলে দেখা যায় এইসব কবিতায় ‘আমি’ যেন বিচ্ছিন্ন কোন দ্বীপ আর বাকী সব কিছু হচ্ছে ‘অপর’। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সাথে মিলিত হওয়ার জন্যেই সকল কান্না কিন্তু এই ‘অপর’ শেষ পর্যন্ত প্রবেশহীন, অজানা এবং সকল আকুতিমিনতিতে প্রতিক্রিয়াহীন অর্থাৎ অমীমাংসিত এক বিচ্ছেদানুভূতি। 
বিনয়ের প্রেমের কবিতায় প্রেমিকা কখনো ঈশ্বরী, কখনো সেই মা যে তাঁকে অবৈধ সন্তানের মতো ফেলে গেছে পথে। কবিতার রন্ধ্রে রন্ধ্রে আর্তনাদ করে আবেগের তীব্রতা, অথচ তরল জল যেমন হিমাঙ্কে নেমে এসে বরফে রূপ নেয়, তাঁর কবিতায় আবেগও তেমনি স্ফটিকধর্মী হয়ে ওঠে অনায়াসে। বিনয়ের কবিতার স্বতন্ত্র জগতও গড়ে ওঠে এই প্রক্রিয়ায়। কবি নিয়ত নির্ণিমেষ জ্যোৎস্নার সন্ধানে ব্যস্ত থেকেছেন, শোকের ছায়াকে দেখেছেন প্রজ্ঞার অভাবিত শান্তি মূল্যায়নের সপক্ষে। প্রেম ও অ-প্রেমের মত তৃষ্ণা-বিতৃষ্ণায় কবিমানস নির্বিবাদে ঘুরপাক খায় কবিতার বেলাভূমে। কাঙ্ক্ষিত নারী হৃদয়ের অনুগ্রহ লাভে ব্যর্থ হয়েছেন বিনয় মজুমদার। তাই আকাঙ্ক্ষার মনোজাগতিক জটিল ঘূর্ণন তার কবিতায় যে আলো-আঁধারের চিত্রকল্পে, নৈঃশব্দ পরিক্রমণ করে তা তাঁর অমীমাংসিত প্রেমই বলা যায়? তাঁর কবিতা ছুঁয়ে যায় গোপন কাঙ্ক্ষার সব দরজা। তখন কবিতা হয়ে ওঠে হতাশ্বাস জীবনের পরিপূরক—‘আমার আশ্চর্য ফুল’!

আমরা দুজনে মিলে জিতে গেছি বহুদিন হলো।
তোমার গায়ের রঙ এখনো আগের মতো, তবে
তুমি আর হিন্দু নেই, খ্রিস্টান হয়েছো।
তুমি আর আমি কিন্তু দুজনেই বুড়ো হয়ে গেছি
আমার মাথার চুল যেরকম ছোট করে ছেঁটেছি এখন
তোমার মাথার চুলও সেইরূপ ছোট করে ছাঁটা,
ছবিতে দেখেছি আমি দৈনিক পত্রিকাতেই; যখন দুজনে
যুবতী ও যুবক ছিলাম
তখন কি জানতাম বুড়ো হয়ে যাব?
আশা করি বর্তমানে তোমার সন্তান নাতি ইত্যাদি হয়েছে।
আমার ঠিকানা আছে তোমার বাড়িতে,
তোমার ঠিকানা আছে আমার বাড়িতে,
চিঠি লিখব না।
আমরা একত্রে আছি বইয়ের পাতায়। 

এই কবিতায় চোখ রাখলে একটা জিনিস স্পষ্ট হবে বিনয় মজুমদার তার প্রেমের কবিতাগুলোর মতোই এখানেও উপস্থিতির লুকোচুরি খেলছেন অনুপস্থিতির সাথে। তুমি নেই কিন্তু এই না থাকাটাও যেন তোমার থাকারই প্রমাণ, তোমার অনুপস্থিতিই তোমার নৈকট্যের প্রমাণ কিংবা বইয়ের পাতায় একত্রে থাকা কোন দালিলিক বা ইতিহাসকে নির্দেশ করছে যা ঘুরে ফিরে সেই মীমাংসাহীন!
কবি বিনয় মজুমদার ও অমীমাংসিত প্রেম ক্ষেত্রবিশেষে মাঝে মাঝে পরিপূরক মনে হয়। বিনয় মজুমদারের মধ্যে অমীমাংসিত প্রেম কিংবা অমীমাংসিত প্রেমের মধ্যে বিনয়। বিনয় মজুমদারের কবিতায় অমীমাংসিত প্রেম এমন ভারসাম্যপূর্ণ। পাঠ করতে গিয়ে ভাবতেও হয় বিনয়ের কবিতায় এত অমীমাংসিত প্রেম কেন? অমীমাংসিত প্রেম আবার এক নয়; অনেকগুলো বাঁক এইসব প্রেমের। সঙ্গ-অনুষঙ্গ মিলে কী ভাষণ প্রতাপ সেসব অমীমাংসিত প্রেমের।

বিদেশি ভাষায় কথা বলার মতোন সাবধানে
তোমার প্রসঙ্গে আসি।

কি আশ্চর্য বোধ। সত্যিই তো বিদেশি ভাষা আমরা সাবধানেই বলি। যদি কোনো ভুল ধরে বসে কেউ কিংবা নিজের কাছেও খটকা লাগে এই বোধ হয় ভুল হয়েই গেল। যখন বিনয়ের কবিতায় অমীমাংসিত প্রেমের সন্ধান করছি তখন এধরনের কবিতা উল্লেখ করার মত। ‘তুমি’ নামে যে নারীটিকে সম্বোধন করা হয়েছে সে নারীটি অতীতের কোনো স্মৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রকৃত কবি যখন কবিতায় নারীকে শৈল্পিক করবেন তা যেমন দীপ্তিময় হবে ‘কীটদষ্ট’ কবি অর্থাৎ যে কবি শুধু নামেই কবি তিনি নারীটির শৈল্পিকতা আঁকতে চাইলেও তা মৌলিক হবে না। সেভাবেই যারা চিত্রকর নয় তারাও ছবি আঁকতে চাইলে তা সম্ভব হবে না। এই পারা না পারার দ্বৈততা বা মৌলিক ব্যাপারকে ‘সাধনা’ ও ‘ডুবুরি’ প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা করেনন কবি। সাধনা সুদূরপ্রসারী বিষয়। লক্ষ্য অর্জন হয় বহু পরে কিন্তু লক্ষ্য অর্জন পর্যন্ত সাধনা চলতেই থাকে। ডুবুরি জলের সঙ্গে খেলেই তার কাঠিন্যকে বারবার প্রমাণ করে। যদি কবির ব্যক্তি জীবনে প্রেম ও নারী প্রসঙ্গে গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাককে এখানে আনি তাও আনা সম্ভব এবং প্রত্যেক মানুষের জীবনে প্রেম ও নারীর অপরিহার্যতা স্মরণে রেখে যদি সাফল্য ও ব্যর্থতাকে তুলে ধরি তাহলে কবির মনোজগতের অবধারিত অমীমাংসিত প্রেমকেই অনুধাবন করতে পারি। বিনয় মজুমদারের কবিতার আবেদন ফুরোবার নয়। তাঁর কবিতার অমীমাংসিত প্রেম একটি জীবনচিত্রের শিল্পরূপ। বিনয়ের প্রেম তাঁর একার প্রেম নয় আবার বিনয়ের অমীমাংসিত প্রেমও সবার প্রেম নয় কেবল ব্যক্তি ও  সমষ্টি বোধে স্বতন্ত্র রূপে তা ক্ষেত্র বিশেষে প্রতিনিধিত্বশীল।
বিনয় মজুমদারের কবিতা নিয়ে শেষ কথা বলা অসম্ভব। তাঁর কবিতার বৈচিত্র্য ও স্বরের নানা মাত্রার জন্য। আমাদের আধুনিক জীবন যে ধরনের প্রেম ব্যথা বেদনাকে অনুভব করে তার বিভিন্নতা বিনয়ের কবিতায় এসে নতুন বাঁক পেয়েছে। ফিরে এসো, চাকা—ঐ বাঁকের একটা সাঁকো। এই প্রবন্ধের অন্বেষায় বিনয় মজুমদারের কবিতায় অমীমাংসিত প্রেমকে নতুনভাবে দেখার প্রয়াস করা হল। আরো হয়তো বলার ছিল তা ভবিষ্যতের জন্য তোলা থাক।