ঘর ও অন্যান্য কবিতা

অ+ অ-

 

প্রতিবিম্ব

আমিতো নিজেকে দেখি, সবসময়
দেখতেই থাকি। কতভাবে
কত না পোশাকে
কতই না ভঙ্গিমায়
দেখতেই থাকি, শুধুই নিজেকে! আচ্ছা

গাছেরা কি নিজেদের দেখতে পায়?
বৃক্ষেরা?
তাদের ফলগুলো কি দেখতে পায়

কী অসাধারণ সুস্বাদু রঙে
সেজে উঠেছে ঝরে পড়ার আগে...

মাছেদের চোখ আছে, আছে কি আয়না?
দেখতে কি পারে নিজের লেজের ক্যারিশমা?

 

সত্য

ভালো নয়, মন্দের গভীরতম সত্যের উদ্ভাস যখন
দিকে দিকে। তখন একটি মৃত কবুতরের ডানায়
উড়ে যায় ভোরের বাতাস

মুছে যায় বিগতানদীর বাঁক বদলের ইতিহাস।

 

ঘর

ঘরে ঢুকে দেখি বিছানায় শুয়ে আছে
আমার ভাস্কর্য, পাথরের। যেন এক
কুস্তিগির রাজা শুয়ে আছে কাত হয়ে, যার
বাম হাত কিছুটা বেড়িয়ে আছে
পালঙ্কের বাইরে। যে হাত এখনো 
ধরে আছে আধাভাঁজ কয়েকটি মুদ্রা, কাগজের
যার কোনো জলছাপ কখনো ছিল না

কেউ দেখেনি তার রাজমুকুট কোনোদিন...

 

চাকুরি

ঘুম থেকে উঠতে
এখন আর দেরি হয় না।
এখন আর ভুল হয় না—

কথা বলি নিপূণ-নৈপুণ্যে
অতি সাবধানে।
কখনো বা প্রার্থনার ঢঙে।
সকলেই আমার মালিক

বিনয়াবনত, নিয়মনিষ্ঠ আমি
সবার আগেই
পৌঁছে যাই সবখানে
যেখানে জীবন প্রশ্নহীন—
কেবল ঘাস খায় আনত সবুজে

প্রশ্নাধিকার কেবল তাদেরই
যাদের মধ্যে কেউ-কেউ, একদা
যুক্তিবিদ্যা পড়েছিলেন বলেই
আজও থাকেন সকল যুক্তির উর্ধ্বে

 

পদ্মবীজ

এতকাল তোমার স্বপ্নকে
মানুষের স্বপ্নই ভেবেছিলাম
তাই কি তোমার ইশারায়

সবুজ পাতা হয়ে
দোল খেয়েছি?
ফলিয়েছি সবুজ আপেল
যা তোমার প্রিয়!
ভূমধ্যসাগরপাড় থেকে
এনেছি গোলাপি দ্রাক্ষা!
যে সুধার মদিরায়

তুমি যত আজও বিভোর
পদ্মফোটা গানে!

তোমার কাটে না ঘোর
কিছুতেই। তবু বলি

কান পাতো হৃদ-হৃদে
দেখতে পারবে

পদ্মবীজ বিস্ফোরণের কম্পন
ঠিক কোথায় হয়, কোনখানে