মিথ্যা মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য কবিতা

অ+ অ-

 

মন্দের ভালো

অনেক আগেই নির্বাসিত
‘ভালো’ কিংবা ‘অনেক ভালো’
আমাদের এখন নির্ভরতা 
মন্দের ভালোর উপর। 

একটি পাখির ডানা ভাঙা
একটি পাখির পা নেই 
পড়ছে নাগরিক নামতা নতুন
১ × ১ = ১
২ × ১ = ১
৩ × ১ = ১ 
৪ × ১ = ১
৫ × ১ = ১

উড়ছে মেঘ, ঘুরছে হাওয়া
আরেক কদম এগোলেই 
দেখবে সবাই
সানাইবাদকের জাহান্নামে যাওয়া।         


অন্ধ ঘোড়া

ঘর ভরা বই।

আশ্চর্য
বইগুলো জ্ঞান নয়
দুব্বাঘাসের অহং!   


 
০/শূন্য

চাঁদের আকাশে উঠেছে পৃথিবী। আমায় তুমি দেখছো— আসলে তো দেখছো না। 

ভোর হলো এই আকাশে, ওই আকাশে অন্ধ করা অন্ধকার। আমরা সবাই নিরাকার। 
দূরের দেশে উড়ছে পাখি ভোরের হাওয়ায়। পাখির গায়ে কিচিরমিচির গন্ধ ফুলের। 
ফুলগুলো সব জ্বলজ্বলে তারা। 

খুঁজছি তাঁকে, পাখিটাকে ওড়ায় যে। পাখি তো উড়ছে না—তারা তো জ্বলছে না। 
ডিম ফুটে বেরুচ্ছে ঘোড়া। ঘোড়াগুলো দু’পেয়ে মানব।

মাটির কবর ডাকছে দু’পেয়ে কবরকে হায়—  
কবর আমার ফুলবাগানের মালির হাসি। 
 

খোঁজ

চোখ মেললেই দেখছি
পৃথিবী
তুমি ১ খাবার প্লেট;

বইছে হাওয়া, 
নাচছে আগুন
জলে জলোচ্ছ্বাস, 
চলছে খাওয়া;
মাটির গায়ে কবিতা আঁকছে কেউ

কবিতা আঁকছে যে সে আমি নই, 
‘ফেরদৌস মাহমুদ’

ফেরদৌসকে খুঁজছি, কোথাও দেখছি না; 
আয়নার ভেতর নিত্য দেখা আদমপাখির মুখ।   


ক্রিং ক্রিং

‘মৃতদের ভোটে তিনি জয়ী হয়েছেন। জি-জি মৃতদের ভোটে।
এখানে কেবল মৃতদেরই ভোটাধিকার আছে!’

এই নিয়ে উপন্যাস লেখার কথা থাকলেও, 
কয়েকটি কবিতা লিখেই বছরটা শেষ হয়ে গেল।
মাঝে মাঝে বুদ্ধিজীবীদের গালি দিই
আহা বুদ্ধিজীবীদের গালি দেওয়া আজকাল ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে।

আমার সন্তান বিলুপ্ত হওয়া প্রাণীর ছবি সংগ্রহ করে
বিলুপ্ত হওয়া ভাষা শিখে হাওয়ায় থাকা পানির কাছে।

দুই পা আগাই বিরোধী মাঠে, 
এক’পা পিছাই সর্ষের ভেতর ভূত দেখে। 
আমার প্রিয় সর্ষের মধু সংগ্রহ করি সর্ষের খেতে গিয়ে। 

মেহনতি মৃতের হাতে হাতঘড়ি টিক-টিক করে
মৃতের পকেটের মোবাইল বাজে ক্রিং ক্রিং। 

 

মিথ্যা মন্ত্রণালয়

গায়েবী আওয়াজ—
‘যদি রাজকন্যা হতে চাও,
তোমাকে আয়না দেখা শিখতে হবে।’
—মেয়েটি আয়না খুঁজছে। 

পকেট থেকে আয়না বের করে চুল আঁচড়ায় লোকটা। 
জোকারের বেশে জম্পেস এক ভাষণ দেওয়া হবে আজ। 
উঠে দাঁড়ালেন তিনি মাইক্রোফোনের সামনে। বাতাসে শব্দ—কা-কা।

এ-কি, লোকটা কথা বলার আগেই মাইক্রোফোন কথা বলে উঠলো— 
‘দাঁত মাজতে হবে দাঁত,/ সত্য বলায় করছ তুমি উৎপাত’।
 লোকটা মাইক্রোফোনকে চায় থামাতে—মাইক্রোফোন হাঁটতে হাঁটতে 
মঞ্চ ছেড়ে যায়। জনতা চুপ।

আহা, জনতা নয় কাকেরা চুপ। মেয়েটি আয়না খুঁজছে। 
আয়নার ভেতর বসেছে পার্লামেন্ট। আজ ১টি স্লোগান হচ্ছে পাশ—
‘সত্য এক প্রকার ইলিশ, জল ঝরালেই ফুশ।’

‘সত্য = ইলিশ = ক্ষণস্থায়ী।’