ধান ও অন্যান্য কবিতা

অ+ অ-

 

ধান

লাঙ্গলটা বুক খুলে দিলো শক্ত মাঠের,
চুপসে যাওয়া হৃদয়ের,
স্তব্ধতার মাঝে গোঙরানো পোকারা বেরিয়ে এলো,
পেছনগামী পথ হতে ভিন্ন পথে
আবারও বপন করতে
এই মাটিতে জন্ম পুনর্বার।
লাঙ্গলটা আশাবাদীতার।

ও লাঙ্গলটা নিয়ে নিজেকে খুঁড়তে গেলো
গা জুড়ে নভোলোক নূর,
প্রস্রবন ঘামে উড়ুক্কু মাছের আনন্দিত লাফালাফি
ঝাপ দিলো বুকে তার।
বারবার, শতবার চষে
সে আরেকবার ফিরে এলো হৃদয়ে।

অবশেষে আত্মার কাছাকাছি—
তার হাতে এখন পাঁজা পাঁজা ধান,
এলুমিনিয়ামের গ্লাস,
পানি—
অপূর্ব স্বাদ।

 

ফিসফিস

এই যে মৃত্যু, সারাক্ষণ বোঝাতে চাও তুমি ভয়ংকর
যেন এক মাস্টার তার ছাত্রকে মারে প্রতিদিন
আর সে পরোয়া করে না।
কিছু ফ্যান্টাসি দেখাও, এই যে কেবল হাড়গোড় দেখাও
তা কি সুন্দর? আসো, তোমার দশ হাজার বিটকেলে
পা-তে আংটি পড়াই।

আমরা দুজন দুজনার। অযথা হতে চেয়ো না ব্যতিক্রম,
জানো তো, আমি ভিন্ন তুমি মূল্যহীন।

 

পুনর্জন্মের প্রতি অবিচার

কী আমার চোখের জানালা খোলে?
কে তৈরি করে জ্বলন্ত হৎপিণ্ডে পথ?

কেন এই সীমারেখাটাই বানালাম আমার জন্য?
ওকে হত্যা করতে গেলে আমিই হয়ে উঠি স্ববিরোধী?

নির্ধারিত প্যান্ডেল, রান্না হচ্ছে ইচ্ছে-পাওয়া-স্বপ্ন
যখন বলি এই আমিটা অসহনীয়, চাই অন্য কোন জন্ম—
অমোঘ লেবার পেইন, পেরোতে পারলে বেরিয়ে আসবে সত্য।

 

স্রষ্টা

কী করে বারবার দুঃসময়কে বাছাই করি?
বছর, যুগের সংখ্যাতত্ত্ব বলে তাই।
অপশক্তিকে কব্জা করার শক্তি লালন করছি
যেভাবে আমি সবকিছুকে এটাই ভাবি—

তুমি আমার সুসময়, সত্যি তো? কি বলো?

 

দিন

খুব সহজে তুমি আমায় পাঠ করতে পারো,
আমার উত্তর তোমার জানা।
চানাচুরওয়ালার ঝাঁকুনির মত বদলে দাও সকালের গোনাগুনতি।
ছিন্ন কলাপাতার নতুন পাতা
তবে নয় মেরুদণ্ডে লুণ্ঠিত
সন্ধ্যার অগ্রভাগে তুমি আবারও পড়তে বসবে আমার মনস্তত্ত্ব।

 

আমার নাম

কখনও উত্তর পাবো না জেনেই রওনা দিয়েছি,
প্রাচীন যেভাবে সামনে আগায়,
যেভাবে পিরামিড ফেটে মমি বেরিয়ে পড়ে।
আমি কি কালের অস্তিত্বকে ধারণ করতে পেরেছি?
নাকি মাটি খুললে হব করতালি হাড়ের
নাকি আমার নামই হবে উদাহরণ, সময়ের?