মানুষ বেহাত ও অন্যান্য কবিতা

অ+ অ-

 

নেই

খাতা-কলমে নেই আমি
তবে কোথায়?

যেখানে কেউ নেই
উদ্দেশ্যমুখর লালা কুড়ানো
সন্ধ্যায় ফিঙে দেখার দুটি চোখ
কাউকে দেখে না
                     সেথায়?

মঞ্চে পদে পুরস্কারে
কাকতাড়ুয়ার ছায়া
ছড়িয়ে পড়েছে
সবার অলখ্যে
চোখ মুছে
সরে পড়েছি
সংঘের বাতাস ছিদ্র করে

 

মানুষ বেহাত

একা আর কেউ নয়
যার সঙ্গে কেউ নেই
সেও নয়
যার সব গেছে
সেও নয়
একা
সরল সোজা ঠেলে 
দেওয়া ভিক্ষুকের হাত
যার কোনো করমর্দন নেই
বেহাত মানুষ

 

মুদ্রা ও ক্ষুধার জাগরণ

|| ০১ ||

ঘুমন্ত ডাহুক বাজাবো এবার
বেহুলার বহর দেখবে হাঙরেরা
বিল-ডোবার হাঙরেরা উঠোনে নাচবে
আর মুদ্রা পড়বে শহরজুড়ে
মুদ্রা কুড়াবো আমি, চারবেলা চাক্ষুষে
পান করবো তারে, দানবাক্সের মতো
চেটে চেঁছে শূন্য করে আবার জমাবো
শরীর থেকে ঝরবে অক্ষয়, অলক্ত কাম
তার ভেতর ছেড়ে দেবো গোরের ধূলিবাস

|| ০২ ||

ঋতু স্রোতের ঘ্রাণে মাতাল আষাঢ়ে জ্যৈষ্ঠে 
ডাকো না তুমি এই ফসল হারারে
শত শত বিঘা জমি কান্দে বাতাসে বাতাসে
কান্দে না তোমার মন
জানি বন্ধু জানি, মুদ্রার ফোলা ফোলা স্তন
সোনালি ধানের মতোন
ঢেউ তুলে ফেরে
আর মাথা তাড়িয়ে জাগায় 
গহিন কামরাঙা বন। 
বিদ্যাহীন, রুদ্রহীন নবীনতর ক্ষুধা ফোটে
অগণন তারার জটে
ক্ষুধার আয়োজন করবো এবার সমুদ্রতটে
আসমুদ্র ক্ষুধা চিবিয়ে শত শত সাবমেরিন
ছুটবে তোমার ঘুম বরাবর
তুমি জাগবে মৃতপ্রায় অগ্নিগোলকে
হাঁড় কামড়ানো ক্ষুধার হীরকে

 

আমার ডান দুঃখ

আমাকে খুঁচিয়ে মারে ফিলিস্তিন
আমার চোখগুলো চিবায় ফিলিস্তিন শিশু
ফিলিস্তিন আমার ডান দুঃখ
আমার বাম দুঃখ তার রক্তোৎপল মেঘ
আমি কবিতা লিখি ফিলিস্তিন
তাতে আমার দুঃখগুলো বাঁচে
রাতের তারায় দেখি ফিলিস্তিন নারীর
ভরাট স্তনের বোঁটায় গড়িয়ে পড়ে দুধ
পাশে বেহাত শিশুটি রক্তপায়ী মমি
ব্যান্ডেজে মুড়িয়ে বেহেস্তে যেতে থাকে

বেহেস্ত একটি রাজনৈতিক গোলক!
তার আবর্তনে ঘুমায় কত কত লোক
কেউ একজন শিশুটির প্রতি অনুসূয়া হোক