ইহুদা অ্যামিখাইয়ের কবিতা

অ+ অ-

 

ইহুদা অ্যামিখাই

ইহুদা অ্যামিখাই ইসরাইলের সবচেয়ে বিখ্যাত কবি। সবচেয়ে বেশি অনূদিত কবি। জাতীয় কবি। তিনি ১৯২৪ সালে জার্মানির বুর্জবার্গে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩৬ সালে তার পরিবার ফিলিস্তিনের অভিবাসী হয়। পরিবারে তার লালন-পালন ধর্মীয় ছিল, পরিপক্ক হওয়ার পর আমিখাই ধর্মনিরপেক্ষ হয়ে ওঠেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি হিব্রু সাহিত্য অধ্যয়ন করেন। ডব্লিও এইচ অডেন এবং ডিলান থমাস তার কবিতাকে প্রভাবিত করেছিল। বাইবেলীয়, তালমুদীয় এবং ধ্রুপদি হিব্রু থেকে উত্তর-আধুনিক হিব্রু পর্যন্তভাষার বিভিন্ন স্তর থেকে কাব্য নির্মাণে তিনি ছিলেন শব্দের জাদুকর। তার বেশিরভাগ কাজ আত্মজীবনীমূলক। আমার ব্যক্তিগত ইতিহাস একটি বৃহত্তর ইতিহাসের সাথে মিলে গেছে, তিনি বলেছিলেন। বলেছিলেন—‘আমার জন্য এটি সর্বদা এক এবং সমান।’ অ্যামিখাইয়ের কাজকে ইংরেজি এবং আমেরিকান পাঠকদের কাছে পরিচিত করে তোলেন টেড হিউজ। জেরুজালেমকে সম্বোধন করা অনেক কবিতায়, তিনি ইতিহাস এবং সাধারণ মানুষের প্রতি গভীর ভালবাসা প্রকাশ করেছেন। প্রতিধ্বনির কবিতাগুলো ফ্রম পোয়েমস অব জেরুজালেম থেকে নেওয়া হয়েছে। ২০০০ সালে ৭৬ বছর বয়সে, অ্যামিখাই কর্কট রোগে মৃত্যুবরণ করেন।

ইহুদা অ্যামিখাই © ছবি: উইকিপিডিয়ার সৌজন্যে

 

জেরুজালেমের দৃশ্য

পুরোনো শহরের এক ছাদে
শেষ বিকেলের রোদে ঝুলছে ধোয়া কাপড়
যে নারী আমার শত্রু তার জন্য সাদা কাপড়,
যে পুরুষ আমার শত্রু তার জন্য গামছা,
তাদের কপালের ঘাম মুছে দেয়ার জন্য।

প্রাচীন শহরের আকাশে
একটি ঘুড়ি
সুতোর অন্য শেষপ্রান্তে,
শিশুটিকে
দেখতে পাই না আমি
দেয়ালের জন্য।

আমরা অনেক পতাকা তুলেছি
তারাও অনেক পতাকা তুলেছে
যা আমাদের ভাবায় তারা সুখি
যা তাদের ভাবায় আমরাও সুখি।  


অনন্ত কবিতা

আধুনিক জাদুঘরের ভেতর
পুরোনো সিনাগগের ভেতর
সিনাগগের ভেতর
আমার
ভেতরে আমি
অন্তর আমার
আমার অন্তরের ভেতর
এক জাদুঘরের
ভেতর এক জাদুঘর
এক সিনাগগ
তার ভেতর
আমার
ভেতরে আমি
অন্তর আমার
আমার অন্তরের ভেতর
এক জাদুঘর।

 

পর্যটক

সমবেদনার সব দর্শনে আমরা তাদের পাই
তারা হলোকাস্ট মেমোরিয়ালে বসে আছে।
তারা গম্ভীর মুখ রেখেছিল পরিপাটি দেয়ালে
আর তারা ভারী পর্দার আড়ালে হাসছিল
হোটেলের ভেতর।
তারা তাদের ছবি তুলেছিল
আমাদের নামজাদা মৃতদের সঙ্গে
রাহেলের সমাধিতে আর হার্জলের সমাধিতে
আর আম্যুনিশান হিলে।
তারা কাঁদছিল আমাদের কোমল বালকের জন্য
আর লালসা ফেলছিল আমাদের অদম্য মেয়েদের জন্য 
আর তারা অন্তর্বাস ঝুলাচ্ছিল
তাড়াতাড়ি শুকাতে
ঠান্ডা আর নীল বাথরুমে। 

অনুবাদ ও ভূমিকা সাখাওয়াত টিপু