ঘেরাটোপ ও অন্যান্য কবিতা
ফকিরি
বিচিত্র কলকাকলিতে ভরে গেছে গাছের পাখি
তাদের ডাক দেবার কেউ নাই। এ অস্থিত
জঙ্গলে মানুষ যেভাবে ঝুলে থাকে, বাদুড়েরও
হাসি পায়। তীব্র কটাক্ষ হেনে, ‘কী জ্বালা দি
গেলা মোরে’ বলে আস্কর আলী পণ্ডিত যখন
গেয়ে ওঠেন, রমেশ শীলও তখন ভাবতরঙ্গে
ডুবে যান। জ্বালার দ্বিগুণ ফিরায়ে দেবার তরে
বাতাসের বই যখন তাঁরা মেরামত করেন
আধুনিক কবিরা হেসে ওঠেন। লণ্ডভণ্ড পাখির
ঘর। বাচাল সীমা পেরিয়ে কী সব ক্যাচাল
অনর্থের ফিকির করে ফকিরি তো অনেক হল
ব্যালাডের পর ব্যালাড লিখে তোমারে পাওয়া
হলো না
উপকবিতা
উপকবিতা চেপে বসেছে ঘাড়ে, কেমনে নামাই?
জানো নাকি জাদুটোনা? গোরক্ষনাথের দরবারে
সিদ্ধা হতে যাই। আমার যে কী আছে কে আছে
কিছুই বুঝি না। অবুঝের নাথ তুমি, গ্যাঁড়াকলে
গহ্বরে পড়ি যদি, উদ্ধার করো মীননাথের মত
শিবের গাঁজনে তখন অনন্তকাল সৃষ্টি হবে আর
মধুকূপী ঘাসগুলা নিখিলে উড়বে। পট্টবস্ত্র পরে
শরীর মুড়িয়ে, কী কহো নাথের সাথে? যত বলি
তত আলোর দিকে বেঁকে যাই, যত শুনি তত
অন্ধকারের থেকে হেসে যাই!
ঘেরাটোপ
মহাপ্রকৃতির ঘোর নিয়া নেমে আসবা? কী যে
বলি! দূরাগত লক্ষণ জ্ঞানচৌতিশার আড়ালে।
যতদূর তুমি ডাকবা ততদূর তো আমি যাব
তোমার সাথে যে আমার আজন্ম মুক্তবন্ধন!
‘আমার চিন্তা কী করে চিন্তা করে’ জানি না
আমি শুধু তার ঘেরাটোপে বন্দী হতে চাই।
যেভাবে আমরা থাকি একই বলয়ে, বিশ্বের
বিবিধ ভাগ আমাদের কী রূপে তাপিত করবে
তারপর চলো বের হই সুধাসন্ধানে সৈয়দ
সুলতান-এর সাথে। যদি কিছু মেলে, তো মিলে
কাঁচুলি
বোকো হারামের ঘরে তোমারে পাইনি।
এলটিটিই ডুবে গেছে ভারত মহাসাগরে।
সোমালি জলদস্যুদের থেকে কোনরকমে
ছাড় পেয়ে, ফিরেছি তো ফার্ক বিদ্রোহীদের
রুট বেয়ে। হাতে বোমা নাই, কোন অস্ত্রের
খোঁজও রাখিনি। অবিদ্য জেনেছি, তোমার
দিকে যাওয়ার থেকে বড় অস্ত্র পৃথিবীতে
আর নাই। তবু তাক করে তাকিয়েছি—ঐ
উঁচু স্তনের দিকে, গোলাবারুদেও যার ধ্বংস
হয়নি! ডোম্বীর কাঁচুলি বেন্ধে সে কী ঘ্রাণ
বিভাজিকা বেয়ে গেরিলা যুদ্ধ হবে যে দিন
আমি প্রত্যুৎপন্নমতি স্বাধীনতা সংগ্রামী হব
ঘোড়া মরশুম
ঘোড়া-মরশুমের শেষে তোমার হাতে হাত
রেখে ভাবি—পৃথিবীতে আলগা আলগা লাগে
কেন! দাবড়ানি দিয়া যে-ঘোড়া এত ধূলার
ঝড় তুলেছিল, সে কেন নিশ্চেষ্ট! তমলুক
থেকে চট্টগ্রাম, বন্দরে বন্দরে মানুষের স্মৃতি
যেন একেক অধ্যায়, যার পৃষ্টা জুড়ে শুধুই
সংগম। কী দোষ আমার বলো? হাতের ওপর
হাত রাখা কত সহজ তবু কেন অতো সহজ
নয়! বর্তমানে দাঁড়ায়ে চোখ ঘুরায়ে ভবিষ্যৎ
অতীতে দেখি, প্রাকৃত পৈঙ্গলে প্রেমের শর
সন্ধান কী রূপে হয়েছে! আইসো হাতটি ধরো,
আর চুপে-চুপে বসে ভাবো...
অনেক সুন্দর কবিতা,বিশেষ করে কাচুলি টা অসাধারণ।
Najim Shuvro
মার্চ ১৭, ২০২৪ ০৯:০২