এ. এছেনের প্রথম অনলাইন শিল্পকর্ম প্রদর্শনী
|| শিল্পী কথা ||
এ. এছেন একজন দৃশ্যশিল্পী। জন্ম কক্সবাজার জেলার মহেশখালীতে, ১৯৯৩ সালে জুন মাসে। প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ালেখা মহেশখালিতে সম্পন্ন হয়েছে। এরপর ২০১৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগ থেকে ছাপচিত্র বিষয়ে স্নাতকোত্তর। ২০১৯ সালে তিনি আইসিসিআর স্কলারশিপ লাভ করেন। ভারতে গুজরাটের বরোদার মহারাজা সায়াজিরাও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০২১ সালে দ্বিতীয়বার স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ছাত্রাবস্থা থেকে এছেনের স্বতন্ত্র শিল্প চর্চার শুরু। আর বর্তমানে চিত্রকলা ও ছাপচিত্রসহ শিল্পের নানা মাধ্যমে কাজ করছেন তিনি। স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রায় ২৩টির মতো যৌথ প্রদর্শনীতে অংগ্রহণ করেছেন এ শিল্পী। তবে এখনো নাগাদ তার একক চিত্রকর্ম প্রদর্শনী হয়নি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন চিত্রকর্মশালায় তিনি অংশ গ্রহণ করেছেন । ভারতে গুজরাট রাজ্যে ২০১৯ সালে ললিতকলা একাডেমির একটি আর্ট ক্যাম্পের জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। ২০২০ সালে ভারতে উল্লেখযোগ্য প্রদর্শনী কচি আর্ট বিয়েন্যালে প্রদর্শিত হয় তার শিল্পকর্ম। শিল্পী এ. এছেন বর্তমানে ঢাকায় বসবাস করছেন।
|| আঁকতে আঁকতে যাপন ||
প্রতিদিনের জিজ্ঞাসা নখের সাথে কেটে যায়, চুলের সাথে ঝরে যায়। একদিন ঠিক করে নিলাম বিকেলে হাঁটতে বের হব, অন্ধকার অব্দি হাঁটব, হেঁটে চললাম। শহরে। পাশ দিয়ে একদল মানুষ বহুদূর হেঁটে যায়, চোখ শুকনো, শুকনো তাদের চামড়া, চামড়ার ভেতরে মাংসের সাথে লাগানো রগের রক্তের ভেতরে জ্বালা ।
দ্রুত স্কিপ করলাম তাদের। বাঁ দিকের রাস্তায় ঘুরলাম, হেঁটে চললাম আবার। এক হাতি চাঁদা তুলছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে, বড় বড় চার-পা তার শিকলে বাঁধা, সবাই তার ছবি তুলতে লাগল, আমিও তুললাম একটা। তারপর ফের হাঁটতে শুরু করলাম এবং দেখতে থাকলাম তাকে। হাতিটার চোখে ছিল ক্লান্তি আর নিষ্পৃহ ঘৃণা—আমার বা আমাদের মত সকলের প্রতি।
যাই হোক, এই দৃশ্য অতিক্রম করে যা করছিলাম সেটা পুনরাবৃত্তি করতে লাগলাম, হাঁটা দিলাম জাগ্রত অন্ধকারে, দীর্ঘশ্বাসের সাথে। একদিন এই শহরটিই যেন উড়ে যাবে নিস্তব্ধতার ভেতর উদাসীনতায় সমস্ত দীর্ঘশ্বাসের আত্মার সাথে, শান্তির মৃত্যুতে। কতশত ভাবনা বিড়বিড়াচ্ছে মাথার মধ্যে, জবাইকৃত প্রানীর মাথা, ফিনফিনে মানুষের শরীর, গ্যাসের চুলা, কারাগার, অসুস্থ ভিখারি, মাফিয়া, ভোরের বাতাস, ভাড়াতে খুনি, নির্মল শিশুর হাসি, শতসহস্র ভাবনা হাঁটতে থাকার মাঝখানে।
এক চৌরাস্তা মোড় ক্রস করে আরেকটা রাস্তায় এসে পৌঁছালাম। কিছুদূর আগানোর পর রাস্তার পারে অনেকগুলো বিশাল আকৃতির পাইপ রাখা দেখলাম। ঠিক তার আশেপাশে উঁচু-লম্বা বিল্ডিংগুলো একে-অন্যের সাথে গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। হঠাৎই পাইপগুলেঅ থেকে এক বিকলাঙ্গ ছায়া আমার দিকে এগিয়ে আসছে, এবার আমি খানিকটা থমকে গেছি! বুকের ভেতরে হৃৎপিণ্ডটা থরথর করে শব্দ করছে, শব্দের তীব্রতার ফলে শরীরে হাতের তালু আর পায়ের পাতায় অনেক ঘাম বের হচ্ছে, নাকের চারপাশে একটা গন্ধ ঘুরে বেড়াচ্ছে। গন্ধটা শ্মশানের গন্ধের মতন, যা বর্ণনাতীত। একি! ঐ ছায়ার মানুষটা খুবই ধীর গতিতে এগিয়ে আসছে, কাছে আসতেই হাত পাতলো। তার এক পায়ে ঘাঁ হয়ে অস্বাভাবিক একটা শেইপে ফুলে আছে, চুল যেন ত্রিশবছর ধরে আধোয়া, জীর্ণশীর্ণ শরীরে শুধু তলপেটতার দিকে চোখ পরতেই বুঝতে বাকি থাকল না সে অন্তঃসত্ত্বা। মুহূর্তের মধ্যেই আমার সবকিছু অস্বাভাবিক আর এলোমেলো লাগছে, স্বাভাবিক চেতনা বা জাগরণ মাঝে মাঝে ভেঙে গেলে যেমন হয় তেমন!
এই দৃশ্যটাও স্কিপ করলাম, পালালাম অন্য রাস্তায়। রেসিডেনসিয়াল এলাকায় এসে পরলাম বলে মনে হচ্ছে, গোছানো সবকিছু দেখা যাচ্ছে। তবে এখানে এক জায়গায় ভীড়, মানুষের, কিন্তু কেন? আসলে শ্মশানের গন্ধটা ঐ রাস্তার না, এখান থেকে আসছিল। সবার ফিসফিসানি থেকে মৃদু শুনা যাচ্ছে এক বিল্ডিং-এ একটা লাশ চারদিন ধরে রুমবন্ধি, কেউ কিছু জানে না! কে যেন বলে উঠল, এখানকার সবাইতো আজকাল ইন্ডিভিজুয়াল। তবে লাশের গন্ধটা ইন্ডিভিজুয়ালিটি ব্রেক করে সবার নাকে গিয়ে সন্দেহ পয়দা করে দিল বলে!
আর কি, আমি ফের পালালাম। আমার সাথে সাথে পালিয়ে বেড়াচ্ছে শ্মশানের গন্ধটাও। পালাতে পালাতে ভাবতে থাকলাম মস্তিষ্ক সম্পর্কে। মানুষের মস্তিষ্ক কী ভাবায়, কী করায়, আর এসমস্ত ভাবনা আর জিজ্ঞাসা থেকে কুড়ে পাওয়া গল্প আর দৃশ্যগুলোকে আঁকি, আঁকতে থাকি। কারণ এখনো এই শহরেই আমাদের যাপন, তাই এই শহরকে আমার আঁকা।
প্রতিধ্বনি আয়োজন করেছে শিল্পী এ. এছেনের প্রথম একক অনলাইন প্রদর্শনী। শিরোনাম ‘অতিকায় শ্বেত শহর’। প্রদর্শনীটি চলবে ১৬ নভেম্বর থেকে ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ সাল নাগাদ।
শিল্পকর্ম প্রদর্শনী || অতিকায় শ্বেত শহর || এ. এছেন
Hand, leg and throat are living together [Mixed print, 2021
Sooner or later [Glass marker, 2021]
Untitled [Mixed Media, 2020]
When we are making sense [mixed Drawing, 2017]
You [Lithography, 2019]
The lizard lost on highway [woodcut & lithography, 2018]
The day before Dawn [pen on paper, 2020]
A Fungus Flower [glass marker on paper, 2022]
Travel to The Sun [pen on paper, 2021]
The Fair of Cities [water colour and pen, 2023]
শিরোনাম: স্টিল ওয়াকিং [কাঠখোদাই ২০১৬]
অতিকায় শ্বেত শহর সিরিজ [মিশ্র মাধ্যম, ২০১৬]
অতিকায় শ্বেত শহর সিরিজ [কাগজে কলম, ২০১৬]
অতিকায় শ্বেত শহর সিরিজ [মিশ্র মাধ্যম, ২০১৬]
Thousand blind windows 1 [dry point, 2017]
Thousand blind windows 2 [lithography, 2017]
Fragments on the road [mixed print, 2017]
কপিরাইট © এ. এছেন
কাজগুলো অসাধারণ। এমন প্ল্যাটফর্ম সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য।
Sumon Perves
নভেম্বর ১৬, ২০২৩ ১৭:২১
এছেন বরাবরই ভালো কাজ করে। এ কাজগুলো অসাধারণ। শিল্পীর জন্য শুভ কামনা রইলো।
Fahad Hasan Kazmee
নভেম্বর ১৬, ২০২৩ ১৭:০১
প্রথমে ভেবেছিলাম পরীক্ষাটার জন্য সম্ভবত শিল্পী এ. এছেনের শিল্পকর্ম প্রদর্শনীটি মিস হয়ে যাবে কিন্তু প্রতিধ্বনির এমন একটা সুন্দর এবং ভিন্নধর্মী প্লাটফর্ম উদ্যোগের জন্য রুমে বসেই দেখছি।প্রতিধ্বনিকে সাধুবাদ এবং আগামীর জন্য শুভকামনা।শিল্পকর্মগুলো খুবই ভালো লেগেছে শিল্পী এ. এছেন দিদির জন্য শুভকামনা
কনক চাকমা
নভেম্বর ১৬, ২০২৩ ১৮:৩৬
বন্ধু হিসেবে বলছিনা...অসাধারণ হয়েছে তোমার কাজ...অনেকদিন পর তোমার কাজ দেখলাম...বন্ধু এগিয়ে যাও...❤️❤️❤️❤️❤️
পিংকি বড়ুয়া
নভেম্বর ১৬, ২০২৩ ১৮:৪৮
সুন্দর কাজ ♥️
মোহাম্মদ সায়েদ কবির
নভেম্বর ১৬, ২০২৩ ২০:৪০
অসাধারণ অভিব্যক্তি????????শুভ কামনা ????????বন্ধু শিল্পী এ.এছেনের জন্য।
স্মৃতি
নভেম্বর ১৬, ২০২৩ ২১:৫৪
শিল্পী এ এছেন আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বিভাগীয় সহপাঠী, ওর কাজ গুলো ছিল ভিন্ন কাঠামো। বড় বড় ফিগারের বিমূর্ত অবয়ব, যেমনটা মানুষ সপ্নে দেখে থাকে। ওর অন্তরের কথা গুলো উদঘাটনের চেষ্টায় থাকতাম। ধন্যবাদ "প্রতিধ্বনি " কে পুনরায় দেখার সুযোগ করে দেয়ায়। জীবন সুন্দর হউক, ভালোবাসা চলমান থাক।
মো: আবদুল হান্নান
নভেম্বর ১৬, ২০২৩ ২২:৩১
শিল্পী এ এছেন আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বিভাগীয় সহপাঠী, ওর কাজ গুলো ছিল ভিন্ন কাঠামো। বড় বড় ফিগারের বিমূর্ত অবয়ব, যেমনটা মানুষ সপ্নে দেখে থাকে। ওর অন্তরের কথা গুলো উদঘাটনের চেষ্টায় থাকতাম। ধন্যবাদ "প্রতিধ্বনি " কে পুনরায় দেখার সুযোগ করে দেয়ায়। জীবন সুন্দর হউক, ভালোবাসা চলমান থাক।
মো: আবদুল হান্নান
নভেম্বর ১৬, ২০২৩ ২২:৫৩
শিল্পী এ.এছেন ধন্যবাদ গুল্পগুলোকে অনেক সুন্দর দৃশ্যায়নে রূপান্তরের জন্য। " অতিকায় শ্বেত শহর আর The fair of cities "????প্রতিধ্বনিকে ধন্যবাদ, কাজগুলো দেখার সুযোগটাকে সহজ করে দেয়ার জন্য।
Animesh Majumder
নভেম্বর ১৬, ২০২৩ ২২:১৮
শিল্পী এ.এছেন ধন্যবাদ গুল্পগুলোকে অনেক সুন্দর দৃশ্যায়নে রূপান্তরের জন্য। " অতিকায় শ্বেত শহর আর The fair of cities "????প্রতিধ্বনিকে ধন্যবাদ, কাজগুলো দেখার সুযোগটাকে সহজ করে দেয়ার জন্য।
Animesh Majumder
নভেম্বর ১৬, ২০২৩ ২২:১৯
অসাধারণ দিদি প্রনাম নিও ????
Hridik
নভেম্বর ১৭, ২০২৩ ০১:৫৪
বাহ! দারুণ কাজ। মাতৃভূমির শিল্পীকে দেখার স্বাদ জাগলো। ????
মামুনুর রশিদ
নভেম্বর ১৭, ২০২৩ ০২:১২
Congratulations and best wishes. I enjoyed the exhibition and shared the link in my fb.
Kabita Chakma
নভেম্বর ১৭, ২০২৩ ১০:৫০
Congratulations and best wishes. I enjoyed the exhibition and shared the link in my fb.
Kabita Chakma
নভেম্বর ১৭, ২০২৩ ১০:০৫
Congratulations and best wishes. I enjoyed the exhibition and shared the link in my fb.
Kabita Chakma
নভেম্বর ১৭, ২০২৩ ১০:১৬
Congratulations and best wishes. I enjoyed the exhibition and shared the link in my fb.
Kabita Chakma
নভেম্বর ১৭, ২০২৩ ১০:৩৪
সাফল্য কামনা করছি
saem Hossen
নভেম্বর ১৭, ২০২৩ ১৫:১৭
সাফল্য কামনা করছি
saem Hossen
নভেম্বর ১৭, ২০২৩ ১৫:০১
দেখতে দেখতে আমিও যেনো আবার যাপন করে নিলাম আমার কলেজ জীবনের টুকরো অনেক স্মৃতি।রোমন্থন করে আসতে পেরে ভালো লাগলো খুব। আপনার জন্যে অনেক শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো এছেন দি।
Mariam Begum Juthy
নভেম্বর ১৮, ২০২৩ ০৭:৩৭
খুবই ভালো লাগলো শিল্পকর্মগুলো দেখে। শিল্পী এ.এছেন এর জন্য অনেক শুভকামনা। প্রতিধ্বনিকে ধন্যবাদ সুন্দর শিল্পকর্মগুলো আমাদের দেখার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
সুস্মিতা সবুর
নভেম্বর ১৮, ২০২৩ ১১:৫৭
দারুণ কাজ, অনেক ভালো লেগছে।
শাশ্বতী মজুমদার
ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২৪ ১৯:৩৬
এটি একটি অসাধারণ উদ্যোগ, প্রতিধ্বনিকে ধন্যবাদ শিল্পী এ.এছেন এর কাজকে সবার সামনে রাখার জন্য❤️
Sumon Sutrodhar
নভেম্বর ১৬, ২০২৩ ১৫:৩৩