গলির আকাশে একফালি চাঁদ
ছেলেটা পেছনে যেতে চেয়েছিল, ভিড়ের মধ্যে একটু ধাক্কা লেগেছিল, চলতি বাসে সে একটু আস্তে-ধীরে গেলেই পারত, তাড়াহুড়ো করে যাওয়ার কারণেই হয়তো কনুইয়ের গুঁতো লেগে গিয়েছিল, মাহবুবও চুপ করে থাকলে পারত, কিন্ত, সে খেকিয়ে উঠল, এই, বেটা চোখে দেখস না!
ছেলেটাও তা হজম করতে পারত, বলতে পারত, সরি, আংকেল, খেয়াল করি নাই, কিন্তু, সে ধমকে উঠল, এই বেটা, তুই-তোকারি করিস ক্যান? একদম ঘাড়টা ধইরা বাস থাইকা নামাইয়া দেব।
গরমে মাহবুবের মুখটা জ্বলছিল। হঠাৎ মনে হলো কেউ যেন গরম তেলের ছিটা মেরেছে তার চোখেমুখে। তার গায়ের রঙ যদি সুন্দর হতো তাহলে হয়তো অপমানে লাল হয়ে যেত। কালো বলেই তার মুখটা কেমন ছাই রঙের হয়ে গেল। কয়েক মুহূর্তের জন্য চোখের সামনে কিছু দেখতেই পেল না। মাথাটা কেমন ফাঁকা হয়ে গেছে। বাসের যাত্রীরা ছেলেটাকে ঠেলে পেছনে পাঠিয়ে দিল, থাক, ভাই, যান, মুরব্বি মানুষ।
বাসের হ্যান্ডেল ধরে দুলতে দুলতে মাহবুব ঘাড় কাৎ করে তাকাল, ছেলেটা পেছনে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। মাহবুবের ইচ্ছে করল গিয়ে মুখ বরাবর একটা ঘুষি মেরে বসে। কিন্তু, ছেলেটা দশাসই। মাহবুব আবার ভাবল, দোষটা তার নিজেরই। সে কেন ছেলেটাকে তুই করে বলতে গেল?
আসলে মেজাজটা খারাপ দুপুর থেকেই। লাঞ্চের পর নির্বাহী সম্পাদককে গিয়ে বলেছিল, এভাবে তো আর পারছি না, ভাই, আগুন লাগা খরচের বাজার। বেতনটা আরেকটু না বাড়ালে তো হয় না। নির্বাহী সম্পাদক বিরক্ত হয়ে বললেন, না পোষাইলে চাকরি ছাইড়া দেন। মালিক তো পত্রিকা বন্ধই কইরা দিতে চায়। আমরা হাতে-পায়ে ধইরা রাখছি।
মাহবুব আর কথা বাড়ায় নাই। বেশি কথা বললে যদি চাকরিটাই চলে যায় সে তখন যাবে কোথায়? এ-বয়সে নতুন পত্রিকায় গিয়ে সেট হওয়া কঠিন। আর নতুন পত্রিকা সমানে আসলেও দুচার বছরের মধ্যেই টিমটিমানি শুরু হয়ে যায়। এটা পুরনো পত্রিকা বলে কোনোরকমে এখনো টিকে আছে।
পরের স্টপেজে মাহবুব নেমে গেল। যদিও সে নামত আরো দুস্টপেজ পর। কিন্তু, এই বাসে তার আর দাঁড়িয়ে থাকতে ইচ্ছা করছে না। ছেলের বয়সি একটা ছেলে তাকে তুই করে বলল! আরে বেটা, তুই বুঝবি না তোর বাপের বয়সি একটা লোক কোন টেনশনে হঠাৎ দুর্ব্যবহার করল! মাহবুবের কেমন কান্না পেয়ে যেত লাগল, ইচ্ছে করল, ছেলেটাকে গিয়ে বলে, বাবা, আমার ভুল হইয়া গেছে। নানা টেনশনে থাকি তো। মাথাটা গরম হইয়া যায়। কিছু মনে কইরো না।
এই নাটকীয়তা সে করতে পারল না। ক্ষমাশীলতার মহৎ পরিচয় দেয়ার জন্য যে করত তা না। ছেলেটার বিবেক জাগ্রত করে দিয়ে একটা শাস্তি দিতে চেয়েছিল। শাস্তির বিনিময়ে ক্ষমা অনেক সময় বড় শাস্তি হতে পারে।
রাস্তায় সমানে ধুলা, আর সমানে গাড়ির হর্ন। ফুটপাত দিয়ে যে হাঁটবে সে উপায়ও নাই। সমানে ভাসমান দোকান বসে আছে। টিস্টল, ভ্যানগাড়িতে ফলমূল, সব্জি, জুতার দোকান—পুরো একটা বাজার। হাঁটতে গেলেও এখানে-ওখানে ধাক্কা খেতে হয়। খেলেও, মরে গেলেও আর কোনোদিন মাহবুব কাউকে ধমকে উঠবে না, তুই করে তো কোনোদিন বলবেই না কাউকে। তার জনমের শিক্ষা হয়ে গেছে। সামান্য শিক্ষা, রাস্তাঘাটে কাউকে তুইতোকারি করতে হয় না, তাও, এই সাধারণ শিক্ষা হতে তার এত বয়স লাগল কেন?
না, কোনোদিন সে বলে না কাউকে, সারাজীবন তো হজমই করল, কতো গুঁতো, ধাক্কা, লাত্থি। আজকাল কেন যেন আর পারছে না। সত্যিই বয়স হয়ে গেছে।
কুত্তামারা গরম। রুমাল বের করে কপাল আর ঘাড় মুছতে মুছতে সে যতটা দ্রুতি সম্ভব পা চালাল। হাঁটতে তার খারাপ লাগে না, কিন্তু, এই ভীড় আর গরম, এই ধুলো আর হর্নের মধ্যে হাঁটাটাও একটা নারকীয় শাস্তি। আহা, কোন পাপে এই জাহান্নামের শহরে পড়ে আছে সে! বাড়িতে যদি একটু জমিজিরাত থাকত, চলে যেত কবেই। হালচাষ করে খেত। না, তা হয়তো পারত না, ভাবে শুধু মাঝে মাঝে। আবার ছিলও তো না কিছু। গ্রামই তো তাকে গলাধাক্কা দিয়ে শহরের দিকে পাঠিয়েছে। গলাধাক্কা খেলেও শহরে একটা আশ্রয় মেলে। গ্রামে থেকে সে করত কী? মাস্টারি করতে পারত। ব্যবসাটেবসা করতে পারত। কিন্তু, লেখালেখির একটা ঝোঁক ছিল। যখন শহরে এসেছিল গায়ে-গতরে সবই সয়ে গিয়েছিল। এখন আর পারছে না। কিন্তু, যাবে কোথায়? কেমন দম বন্ধ লাগে।
বাসা থেকে ফোন। হাঁটতে হাঁটতেই মাহবুব বলল, বলো।
আফরোজা বলল, ডিম নাই, ডিম নিয়া আইসো।
মাহবুব আস্তে করে বলল, আচ্ছা্।
পকেটে মোবাইলটা রেখে মাহবুবের মনে হলো মেজাজটা তার সকালেই খারাপ করে দিয়েছিল আফরোজা। সে অফিসে বেরোচ্ছে তখন বলে, মাছ নাই দুদিন ধরে। আসার সময় পারলে মাছ নিয়া আইসো।
মাহবুব বিরক্ত হয়ে বলল, মাসের শেষ, এখন মাছ আনার টাকা পাব কোথায়? মাছ ছাড়াই খাও দুচারদিন।
আফরোজা কিন্তু তাতেই চুপ থাকতে পারত। তাও সে মুখ খুলল, আমরা তো খাইতে পারি, তুমিই তো খাইতে পারো না। খাইতে বসলে তো খালি জিগাও, আর কিছু নাই?
আফরোজা যদি তাকে ত্যক্ত না করত তাহলে হয়তো আজ দুপুরে গিয়ে সে নির্বাহী সম্পাদকের রুমে হানা দিত না। নির্বাহী সম্পাদক যদি ওই নির্মোহ মন্তব্য না করতেন বাসের ভেতরে গুঁতো কেন, লাথি খেয়েও সে কোনো রা করত না। তাহলে এই অপমানটা আজ তার কপালে জুটত না। অপমান তো না, মনে হচ্ছে কেমন দগদগে ঘা, বুকের ভেতর কেমন জ্বলছে।
আসলে, মাহবুবের হঠাৎ মনে হলো, তার দুর্ভাগ্যের শুরু আজ থেকে না, তার জন্মের পর থেকেই। সংসারের বড় ছেলে, এতগুলো ভাইবোন, বাবা ছিলেন পোস্ট মাস্টার, সে যে কিছু লেখাপড়া শিখে ভদ্রলোকের কাতারে উঠে এসেছে এ-ই তো ঢের! নিজের পরিবার নিয়ে এই শহরে যে এখনো খেয়েপরে বেঁচে আছে তাতেই তো আলহামদুলিল্লাহ!
ছেলেটা যদি দাঁড়িয়ে যেত তাহলে এত চিন্তা করতে হতো না। মাস্টার্স পাশ করে দুবছর ধরে বেকার। সাবজেক্টটা ভালো ছিল না। পাবলিক কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স না পেয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করেছে পরিবেশ বিজ্ঞানে। সাবজেক্ট খারাপ ছিল না, এটাই যদি কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ত ভালোই করত। মাহবুবও তখন ছেলেটার দিকে খেয়াল দিতে পারেনি। সে নিজেই ছিল শত ঝামেলায়। বাবা মারা গেল। একটা বোন তখনো বিয়ের বাকি। মা-ও অসুস্থ হয়ে পড়ল। নিজের চাকরি-চাকরি নিয়েও তখন টানাটানি চলছিল। চার-পাঁচটা বছর কেমন চোখের পলকে কোথায় চলে গেল। ছেলে অনার্স শেষ করার পর তার মনে হলো পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ে পড়ে এই ছেলে এই দেশে করবে কী! এই দেশে পরিবেশ নিয়ে কারো মাথা ব্যথা আছে! এখন তো ছেলের চিন্তায় রাতে তার ঘুম আসে না। ছেলেটা অবশ্য খাটছে। সকাল-সন্ধ্যা তিন-চারটা টিউশানি করে। আর রাত-দিন পড়ে। একবার বিসিএস দিয়েছে। বিসিএসটা যদি একবার হয়ে যায়। নিদেনপক্ষে কোনো সরকারি স্কুলে একটা চাকরি, তাহলে মাহবুবও বাঁচে, ছেলেটাও বাঁচে।
মেয়েটার মাথা ভালো। ফার্স্ট গার্ল। ছেলেকে গাইড করতে ব্যর্থ হয়ে মাহবুব পুরো মনোযোগ ঢেলে দিয়েছে মেয়ের দিকে। অফিস ছুটি হলে তাড়াতাড়ি বাসায় এসে মেয়েটাকে নিয়ে পড়তে বসে। বাংলা, ইংরেজি, সমাজ, বিজ্ঞান সে-ই পড়ায়। আর মাসুদ অংক পড়ায়। এ-বয়সেই এ- মেয়ে নিজে নিজে সুন্দর ইংরেজি লিখতে পারে। এ- মেয়ে যে ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো বিষয়ে সুযোগ পাবে এতে কোনো সন্দেহ নাই। কিন্তু, তার তো অনেক দেরি। মেয়ে তো সবে পড়ে এইটে।
আরেকটা সন্তান সে নিতে চায়নি। আফরোজাই ঘ্যানঘ্যান শুরু করল, একটা মেয়ে না থাকলে হয়? ছেলেটা তো হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। ছেলেমানুষ বড় হলে মায়ের কাছে থাকে? আমার একটা মেয়ে লাগবেই।
মেয়ে চাইলেই যে মেয়ে হবে কে বলল তোমাকে?
একবার না হলে আরেকটা নেব। মেয়ে আমি নেবই।
মরছি। একটারে পারি না পালতে।
আচ্ছা, একবার দেখি কী হয়। এ-ই লাস্ট।
মাহবুবের তখন চাকরিতে একটু সুস্থিরতা এসেছিল। নতুন কিছু সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছিল। খরচের বাজারে তখনো এত আগুন লাগেনি। সে মত দিয়েছিল। মায়া যখন হলো মাসুদ তখন বেশ বড়সরই। প্রথম দু-তিন বছর কেন যেন মেয়েটার প্রতি এত মায়া জন্মায়নি। তার সব টান ছিল তখন ছেলেটার প্রতিই। ছেলেকে নিয়ে ঘোরে, ছেলেকে নিয়ে ঘুমায়। ছেলেকে নিয়ে পড়তে বসে, ছেলের সাথে ক্রিকেট খেলে। বাপ-ছেলে বেশ বন্ধুর মতোই হয়ে গিয়েছিল। আফরোজাই একদিন বলল, কী, তুমি দেখি মেয়েটার দিকে ফিরেও তাকাও না! সারাক্ষণ আছো খালি ছেলে নিয়াই!
আর আজ! মেয়েটা তার কলিজার টুকরা। শত ঝামেলা থাকলেও মেয়ের সাথে সে কখনো মুখ কালো করে কথা বলে না। আফরোজাও যদি কখনো কিছু বলতে ভয় পায়, মেয়েকে দিয়ে বলায়। মাহবুব মেয়েকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলে, মা, কিছু লাগবে তোমার? মেয়ে মাথায় নাড়ায়, কিছু লাগবে না। কখনোই সে কিছু চায় না। খুব ছোট বয়সেই সে বাবার অক্ষমতা বুঝে গেছে। আহা, মাহবুবের চোখে পানি এসে পড়ে, মেয়েটা তরতর করে বেড়ে উঠছে। এ-বয়সে নিয়মিত একটু দুধ-ডিম, ফলমূল খাওয়া দরকার। তাও সে যোগাড় করতে পারে না।
গলিতে ঢুকতেই দেখে মোড়ের চায়ের দোকানটায় ছেলেগুলো বসে আছে। মাসুদেরই বন্ধু এরা। বড়লোকের ছেলেপুলে। কেউ হয়তো স্থানীয় বাড়িওয়ালার ছেলে, কারো বাবা হয়তো ফ্ল্যাটের মালিক। ভাগ্য ভালো নিয়ে জন্মেছে, তাই এদের জীবন হয়ে গেছে পানির মতো সহজ। ছোটবেলায় ভালো গাইডলাইন, ভালো পরিবেশ পাওয়াতে লেখাপড়াটাও হয়েছে ভালো। কেউ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ না পেয়ে কেউ কেউ পড়েছে নামিদামি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে। ভালো সাবজেক্টে। ফার্মেসি, কম্পিউটার সায়েন্স। ফলে পাশ করে বেরোতে না বেরোতেই চাকরি হয়ে গেছে। এদের কেউ কেউ বিয়ে করে ফেলেছে, কারো-বা সন্তান হয়েছে, কারো কারো বিয়ে হচ্ছে। আফরোজার কাছে প্রায়ই শুনতে পায় মাহবুব, মাসুদের ওই বন্ধুটাও তো বিয়ে করে ফেলল। আর ওর এখনো একটা চাকরি হইল না। মাহবুব ধমকায়, কী শুরু করলা তুমি! চাকরি হইতে সময় লাগে না! খালি বিয়ে করলেই হলো! এত অল্প বয়সে বিয়ে করে কী করবে!
সন্ধ্যার পর ওরা এখানে বসে আড্ডা দেয়, চা-টা খায়। মাসুদকে আজকাল আর ওদের সাথে দেখা যায় না। সে হয়তো তখনো বাড়ি বাড়ি ঘুরে টিউশানি করে। মুদির দোকানটা চায়ের দোকানটার পাশেই। মাহবুব মাথা নিচু করেই ঢুকেছিল, তাও একটা ছেলে সিগারেট ধরাতে গিয়ে তাকে দেখে দ্রুত সিগারেট লুকিয়ে সালাম দিল, স্লামালাইকযুম, আংকেল। ভালো আছেন?
মাহবুব মাথা ঝুঁকাল। ছেলেটার দিকে তাকালও ভালো করে। এরকম বয়েসি একটা ছেলে আজ তাকে তুই করে বলেছে, বাসভর্তি মানুষের সামনে চিৎকার করে বলেছে তাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দিবে। এরা কেউ দেখেনি তো! কারো কানে গেলে মরা ছাড়া উপায় থাকবে না! যদি এ-কথা কোনোদিন তার ছেলের কানে যায়? তার ছেলেও কি কখনো কোনো মুরব্বিকে তুই করে বলে? বলে হয়তো। আজকালকার ছেলেপুলেরা তো মুরব্বিটুরব্বি তেমন মানে না। তাদের সময়ে মুরব্বিদের ধমক-ধামক খেয়েও তারা চুপ থাকত।
দুই হালি ডিমের পুঁটলা নিয়ে মাহবুব গলিতে ঢুকে যায়। একটা গলি পেরিয়ে আরেকটা গলিতে ঢোকে। এ-গলিটা আরো চিপা। কেউ মারা গেলে খাটিয়াতে করে লাশ নেয়ারও উপায় থাকে না। গলিটা অন্ধকার। রাস্তার বাতি নেই। দুপাশের বাড়ি থেকে যতটুকু আলো এসে পড়ে তাতেই যা দেখা যায়। কে যেন পেছন থেকে হেঁটে আসছে দ্রুত পায়ে, পায়ের শব্দ পেয়ে মাহবুব আগেই একপাশে সরে গেল। মাসুদ তাকে পাশ কাটিয়ে আরেকটা গলিতে ঢুকে গেল। বাবাকে কি সে দেখেনি? নাকি দেখেও এড়িয়ে গেল? নাকি টিউশানির তাড়া আছে বলে খেয়াল করেনি?
পেছন থেকে মাহবুব তাকিয়ে রইল। আবছা অন্ধকারে ছেলেটা হাঁটছে বড় বড় পা ফেলে। কেমন টিংটিঙ্গা লম্বা হয়েছে ছেলেটা! রোগা বলেই হয়তো লম্বা দেখায়। এই সেদিন তাকে কাঁধে নিয়ে ঘুরেছে, আজ কত বড় হয়ে গেছে! মাহবুব হঠাৎ খেয়াল করল, বিল্ডিংয়ের ফাঁকা দিয়ে এক ফালি চাঁদ দেখা যাচ্ছে। এখান দিয়ে যে আকাশ দেখা যায় তাই তো কোনোদিন খেয়াল করে নাই মাহবুব। চাঁদটা এমনভাবে উঠেছে যেন এ-গলির মাথাতেই ওর বাড়ি। মাসুদকে মনে হচ্ছে হাঁটতে হাঁটতে সে চাঁদের বাড়ি যাচ্ছে। মাহবুবের ইচ্ছা হয়, ছুটে গিয়ে ছেলেকে ধরে, মাসুদকে গিয়ে বলে, আয়, বাবা, আমার কান্ধে ওঠ, কান্ধে কইরা তোরে আমি চান্দের দেশে লইয়া যাই।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন