কিয়ারোস্তামির কবিতার বাংলা অনুবাদের বই

অ+ অ-

 

আব্বাস কিয়ারোস্তামি চিত্রনির্মাতা হিসাবে বিশ্বখ্যাত, তার আরেকটি পরিচয় তিনি একজন কবি। সিনেমা ও ইন্সটলেশন আর্টের মতোই তিনি তার কবিতার জগতেও মিনিমালিস্ট। তার বেশিরভাগ কবিতা তিন-চার পঙ্‌ক্তির। ফর্মের দিক থেকে কবিতায় জাপানি হাইকু দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন তিনি, কিন্তু কিয়ারোস্তামির কবিতা হাইকু নয়। ছোট-ছোট কবিতা হলেও সেসব লেখার ক্যানভাস বড়, ভাব ও কাব্য প্রকরণে অনন্য। পাঠকের চিন্তাজগত ও বোধকে প্রভাবিত করে, দেখার চোখকে বিস্তৃত করে। কবিতার মিনিমালিস্ট ধারা নিয়ে কিয়ারোস্তামির বক্তব্য এমন, আমি রূপের চেয়ে প্রভাব নিয়ে বেশি চিন্তা করি। আমার দায়িত্ব পাঠক-দর্শকের কাছে আইডিয়া স্থানান্তর করা। যদি সংক্ষিপ্ত রূপে কবিতার বিস্ফোরণ ঘটানো যায়, আমরা যদি সংক্ষিপ্ততার যুগে বেঁচে থাকি, তবে তাই হোক।

কিয়ারোস্তামি কেবল কবিতা লিখেছেন, তা নয়তিনি পারস্যের ক্ল্যাসিক কবিদের কবিতা সম্পাদনা করে নতুন রূপ দিয়েও বই প্রকাশ করেছেন। তার মৌলিক কবিতার বই তিনটি, সেসবের ইংরেজি নাম: A Wolf Lying in Wait/ A Wolf on Watch, Walking With The Wind এবং Wind & Leaf। বই তিনটি প্রকাশিত হয় ২০০৫, ২০০৬ ও ২০১১ সালে। তিনটি বই ইংরেজি থেকে বাংলায় ভাষান্তর করেছেন কবি রুহুল মাহফুজ জয়। বাংলা ভাষায় কিয়ারোস্তামির সমগ্র কবিতার অনুবাদ ও এক মলাটে প্রকাশের ঘটনা এই প্রথম।

আব্বাস কিয়ারোস্তামির কবিতার অনুবাদের বইটি প্রকাশ করেছে যথাক্রমে বৈভব [বাংলাদেশ] ও ছাপাখানা [কলকাতা]। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন শিল্পী রাজীব দত্ত।

 

কবিতা || আব্বাস কিয়ারোস্তামি 

আমি হাসি
কোনো কারণ ছাড়াই,
আমার ভালোবাসতে
কোনো সম্পর্ক লাগে না,
আমি বেঁচে আছি
আদর-টাদর ছাড়াই।
সে-ও বহুকাল।

**


মন্দলোক হবার জন্যে
আমার যথেষ্ট কারণ আছে।
আজব!
কেউই তা বোঝে না।

 

**
আমার করতলে এক হাজার তীর।
এক হাজার অপমান আমার ঠোঁটে।
একটা তীরও আমি ছুঁড়িনি
উচ্চারণ করিনি কোনো অপমান।

 

**
জল আমার পাসপোর্ট নিয়ে গেলো
ওই দিকে
যেদিকে আমি ভ্রমণ করতে চাইনি।

 

*
আমার বাড়িতে
আমি আমারই অতিথি ছিলাম।
এক অনাকাঙ্ক্ষিত আগন্তুকের
ডাকে।