পুরস্কার প্রসাদ ও অন্যান্য কবিতা

অ+ অ-

 

গাজার আকাশ

তোমার ঐ নগ্ন উল্লাসের স্রোতে 
যাব যে ভেসে
ঐ উঁচুতে মেঘও বাসা বাঁধে।
পতনের গল্প তাই আছে জমা
বাতাসের দীর্ঘশ্বাসে! 
ফলে মনোযোগ নেই তোমার প্রণয়াভিলাসে
মন পড়ে আছে খুনে লাল গাজার আকাশে।
কাটা মুরগির মতো কাঁপছে আত্মা
বোমায় গুড়িয়ে দেয়া ঘরবাড়ির নীচে। 
হায়, শকুন সভ্যতা
হাঁপিয়ে উঠছে কবিতা।
কষ্টকর ঐ দুঃখের তরজমা।

 

পরিচয়

তৃতীয় লিঙ্গের মতোই বেসামাল খাপখোলা এই সময়
তোমার আর আর কী পরিচয়?
জানার আগ্রহ নেই। 
যেহেতু জানার সুযোগ নেই 
কার চোখে জ্বলে নক্ষত্র
কার চোখে সন্ধ্যাতারা 
আর কার হাত সদ্য তাজা খুন শেষে ঠান্ডা জলে বিধৌত! 
এবং কখনও কখনও আকাশ কেন মৌনব্রত? 
নৈঃশব্দ্য একাকার সমুদ্র!

 

ধর্মাস্ত্র

বিষয়টা হয়তো নয় ক্রিকেটে শতক হাঁকানোর মতো উত্তেজনাময়
তবু কৌতুহল হয়
যেহেতু খল সময়!
বঙ্গভঙ্গ
ভারতজুড়ে গেরুয়াতরঙ্গ
না প্রতিবিপ্লবীর স্বপ্নভঙ্গ
কোন প্রসঙ্গ
তোমার কাছে মনে হয় বেশি সাবলীল বেশি অন্তরঙ্গ? 
আমার কাছে কিন্তু কবিতার সঙ্গ।
যেহেতু তার মধ্যে সুযোগ নেই 
ধর্মাধর্মে বিভক্ত হই 
মসজিদ ভেঙে মন্দির গড়ি
গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে পাখির কণ্ঠরোধ করি
মানবতাকে ফানুশের মতো উড়িয়ে দিয়ে
হত্যা খুন এবং জবরদস্তি নিয়ন্ত্রণ করি স্বাধীন রাষ্ট্র
যেহেতু হাতে ধর্মাস্ত্র!
নইলে মিসির
কেন বলবে তুমি উপমহাদেশের ফিলিস্তিন 
রাখাইন ও কাশ্মীর?

 

পুরস্কার প্রসাদ

বসন্ত বিবাহিত 
ফুলের প্রতি তো তার থাকবেই অনুরাগ
তাই বলে পাখির কাজ কি শুধু মলত্যাগ?
পুরস্কার উন্মাদ 
যদি না বোঝে চাঁদ কী প্রসাদ
আমার কী করার আছে?
আমি তো বলেছি আলো
যেমন খুশি তুমি খোলো
তোমার মধ্যেই আমি খুঁজি ছায়া
নইলে ঘরে থাকতে চায় না মায়া।
ছায়ার-মায়ার সংসারে
আমি তাকে কীভাবে রাখব ধরে? 
যদি সে আমাকে পোশাকের মতো পরে
আর জীর্ণ করে দেয় ছুঁড়ে!

 

আধুনিক গান

পান্ডুলিপি চুরি কিংবা থিসিস চুরি
নতুন কিছু নয়
তারচেয়েও বিস্ময়
গাছ পঁচার চেয়ে মানুষ পঁচা
ঢের দুর্গন্ধময়! 
ফলে সহজ নয় সহজ নয়
তোমার মতো হই বিভূতিময়।
তুমি কি আধুনিক গানের সঞ্চারী? 
বাতাসে উর্ধ্বাকাশে বহে যে তরী!
নইলে পতনের কেন ভয়?

 

সাতনরী 

আশার ছলনে তিমির গগনে
কেন যে ওড়ে পাখি!
অবাক হয়ে দেখি
আর ভাবি, কোন আকর্ষণে
পার্টি-অন্ধ কর্মীর মতো
জড়িয়ে ছিলাম তার সনে?
বায়বীয় বন্ধনে
কদর্য মিশনে!
তাকালে ছায়াচ্ছন্ন তোমার দিকে
এখন আর মৌনতাকে 
মনে হয় না গৌণ
মনে হয় পাথরের চেয়ে ভারী
যেন অ-কবির গলায় সাতনরী।