কুহক ও অন্যান্য কবিতা

অ+ অ-

 

আকাশ 

আমাকে কবর দিলে তোমরা ভেবো
একটা আকাশকে কবর দিলে আজ।

এই বুক আকাশের চেয়েও অসীম ছিলো।
এই চোখ ছিলো নক্ষত্রের থেকেও জ্যোতির্ময়।
এই স্বপ্ন ছিলো বেদনার চেয়েও নীল।

পাখির মতো আরাম করছে গোটা আকাশ
আর তোমার হাত থেকে খসে পরছে 
ধ্যানী বুদ্ধের মতো নির্বাণপ্রাপ্ত করুণ গোলাপ।
তুমি কখনো শুনবে না আর 
আমার বুক থেকে 
নরম জুঁইয়ের সংলাপ।  
মাখবে না শরীরে ভালোবাসার পরমাণু।

তুমি জানোবকুল ফুল কিভাবে অমরত্ব পায়
আর জানো মৃত্যুর পর
কিভাবে মিশে রব আমি ঘাসে
অথবা তোমার লোহিত মাংসের মাঝে
খুব একান্তে, অথচ নিরুপায়। 


চেরি

এই ঘাস উচ্ছৃঙ্খল নয়
অথচ প্রাণহীন বন্দুক
উচ্ছৃঙ্খল হয় মাঝে মধ্যে। 

যদি তুমি বেয়োনেট দিয়ে
খোঁচাও বুকের বাঁ পাশে আমার
পাবে লাল চেরিফল।
তোমার কি তেমন চেরিফল পছন্দ?
এটা কি তোমার একমাত্র আহার?

এই বুকে স্তনও পাবে
এই স্তন আসলে 
প্রতিটা পুরুষের কাছে নক্ষত্র।

তোমার কাছে কি মনে হয়?
পত্র দিলাম জানিও।

 

কুহক

একটি কমলালেবু হয়ে উঠতে পারে আশ্চর্য কিছু।
একটি আপেল হয়ে উঠতে পারে নক্ষত্রের চেয়েও জ্যোর্তিময়।
একটি আনারস হয়ে উঠতে পারে অনন্য পথ্য।

পেয়ারার সুবাস পেতে পেতে... 
আমি লেবুর মাতাল ঘ্রাণে বেপরোয়া উন্মত্ত।

একটা অসুখ হতে পারে আশ্চর্য বিকেল
একটু ওষুধ হয়ে উঠতে পারে শরীরের অনন্য নরম রোদ।

অথচ আমি প্রার্থনালয় বলতে বুঝি এই শস্যভূমি।
আমি প্রতিমা বলতে বুঝি আমারই ছায়া।
আদর্শ বলতে বুঝি আমারই ভুলেভরা আত্মজীবনী।

আমার বুক বলতে বুঝি গোলাপ তৈরির মাঠ।
আমার চোখ বলতে বুঝি নিরানন্দ বিকেল।

 

কলঙ্ক

কিছু ডানা ব্যর্থ হয়তো
কিন্তু তার জন্যও অপেক্ষা করে আকাশ।
কিছু দেশলাই ভেজা হয়তো
কিন্তু সেও জানে 
আগুন কতটা তার অপেক্ষায়।

আগুনের কলঙ্ক তার নিজস্ব ধোঁয়ায়।

এই গাছ পাখিদের আশ্রম
পাখিকে আবার গাছের কলঙ্ক ভেবো না
পা কে ভেবো না পথের কলঙ্ক।
উপেক্ষাকে কলঙ্ক ভেবো না।

পাখির ডাককে ভেবো না শব্দ দূষণ।