জন্মান্তর ও অন্যান্য কবিতা
বোধি
দুজন লোক ছিলো
অন্ধকারে বসে
দূরের নীলিমায়
তারারা পড়ে খসে
যেমন আবছায়া
সন্ধ্যা টলটলে
ওদের চোখগুলি
তেমন ছলছলে
মরচে পড়া ছিলো
নিরব সেই লোক
অন্যজন ছিলো
বন্ধ করে চোখ
কখনো লোকদ্বয়
হয়েছে কায়াহীন
থাকছে নিরবধি
শূন্যে সমাসীন
দিনলিপি
যেদিন ছবি তুলে পাঠালাম বেলকনির ফুলের
সেদিন-ই ভুঁই চাঁপা ফুলের
নাম জানলাম আপনার কাছ থেকে
বউ আর বড় বোনকে সে-কথা বললাম
কেউ-ই আমরা তখন পর্যন্ত
এ-ফুলের নাম জানতাম না
বোন বললো—আরো অনেক ফুল ফুটবে
আমাদের ভুঁই চাঁপা ছিলো গোলাপি
আর দেখলাম হলুদ আর সাদাও আছে
আপনার পাঠানো ছবিতে
ভুঁই চাঁপা ফুল তোমার সাথে আমার
বন্ধুত্ব হওয়ার জন্য একজনের
মধ্যস্থতা আছে, তার কথা গোটাগোটা
অক্ষরে সাজানো আছে এই দিনলিপিতে
কোনো এক জেমিনি আছে
আরো আরো জেমিনি
আছে এই ধরাতলে
তাদের খোঁজ আমি জানি
তারা অনেক আনন্দদায়ি
আর মিষ্টি করে কথা বলে
যদি না পড়ো তেমন কুহকের
মায়াজালে, তোমার মতো
অভাগার তবে প্রয়োজন
ফুরায় এ-দুনিয়ায়
আমি জেমিনিদের অনেক
প্রশ্রয় দেই, তাদের আনন্দই
আমার আনন্দ
তবে কোনো এক জেমিনি আছে
তার সাথে আজও দেখা
হয় নাই আমার
জেমিনি তুমি এক বিভ্রম
জন্মান্তর
বাবলার-সারি নিয়ে কথা বলবো এবার: ওরা হলো আমার আ-জন্মের আব্বা-আম্মা, ভাই-ব্রাদার-ভগ্নী আর বন্ধু; হাউই চড়ে যখন যাচ্ছি ভাসতে ভাসতে আচমকা ঝিরিঝিরি ডাক শুনতে পেলাম!
তারা তারস্বরে ডাকে: ও ভাইয়া শোনো, তুমি যে নূতন জেগে ওঠা এয়ারপোর্টে এসে নামবে, আমরা আগেই জানতাম সে বৃত্তান্ত; এই শীতে একটা লাল জাম্পার পরে আসবে, পাঁচ যুগ আগে সেরকম একটা ছবি আকাশের এককোণে দেখা দিয়ে মিলিয়ে গেলো আর তখন থেকেই দুনিয়ায় মর্মর শব্দের শুরু; সেই কবে থেকে বাবলার মাথাগুলি ঝনঝন করছে তোমাকে স্বাগত জানাবে তাই
গাড়িয়াল ভাইয়ের মতো ধূলা উড়িয়ে বাবলার বনে আসো—তুমি চিরন্তন এক প্লেনের পাইলট আর তার আগে একটা হলুদ কুণ্ডের মধ্যে আবরিত ছিলে; দাও ইজেক্টে চাপ—ধীরে ধীরে নেমে আসো পাপড়ির রানওয়েতে।
তোমার চোখে দুটো হরিতাভ আর হাতগুলি
তরুণ বাবলার ডালের মতো সুচিক্কণ ও কৌণিক;
গরুর গাড়ির চাকার মতো তুমি ঋজু—আসো
গোল হয়ে, আসো চক্র হয়ে, ঘুরো আজ পন্থে পন্থে
হ্যাঁ, হ্যাঁ, মনে পড়ছে: সুরকির দেয়ালের সাথে
যেবার বন্ধুত্ব হলো, সেবার ঝোপের মধ্যে একটা হৃদপিণ্ড লুকানো ছিলো, এতোদিন পর বুঝতে পারছি কেনো শাঁসঅলা গোলাপি আভার সে ফলগুলি আমার সাথে লুকোচুরি খেলতো; ওরা হলো কতোগুলো গোলাপি ঠোঁট, আর সেই অপার্থিব ফলগুলির সাথে ঠোঁট বিনিময় করতাম যখন-তখন; তাদের শরীরের নরম তুলতুলে কাঁটাগুলি বিঁধলে ঘুমিয়ে পড়তাম আমরা
গোলাকার বিদ্যাপীঠের আপা আপনাকে ধন্যবাদ,
সেই রহস্যের কিনারা হলো শেষমেশ, যেদিন আপনি ওরে বাবলা, ওরে বাবলা ব'লে বাচ্চার মতো আমাকে প্রাণপণে জড়িয়ে ধরলেন!
নকীব ভাইয়ের কবিতা, আমাকে অন্য এক আনন্দভুবনে নিয়ে যায়। শুভেচ্ছা নকীব ভাই, শুভাকামনা টিপু ভাই
মহিউদ্দীন মোহাম্মদ
ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩ ২৩:৩৫
অনেকদিন পরে উনার কবিতা পড়লাম, সুন্দর।
আহমদ সায়েম
ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৩ ১২:১২