বাংলায় কিম জিইয়ং, জন্ম ১৯৮২

অ+ অ-

সমকালীন দক্ষিণ কোরিয়ান কথা সাহিত্যের খোঁজ খবর নিলে যে কয়টি বইয়ের নাম সবার আগে আসবে, তার ভেতর চো নাম- ‍জুর লেখা কিম জিইয়ং, জন্ম ১৯৮২ এক থেকে পাঁচের ভেতর থাকবে। ছোট্ট একটা নভেলা। প্রায় বিশটি ভাষায় অনুদিত এবং সারা দুনিয়ায় দশ লক্ষ কপির উপরে বিক্রি হয়েছে এটি। একটা উপন্যাসের সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাব যে কতটা ব্যাপক হতে পারে তার ভালো একটা উদাহরণ বইটি। একে তুলনা করা হয় ১৮৫২ সালে প্রকাশিত  হ্যারিয়েট বিচার স্টোয়ের দাসপ্রথাবিরোধী উপন্যাস আঙ্কেল টমস কেবিন-এর সাথে যাকে আমেরিকার গৃহযুদ্ধের ভিত্তি বলা হয়ে থাকে। এই যুদ্ধের অন্যতম কারণ ছিলো দাসপ্রথাকে চিরতরে বিপুপ্ত করা। ঠিক একইভাবে চোকিম জিইয়ং, জন্ম ১৯৮২ কোরিয়ায় নারীর সামাজিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিরোধকে শক্তিশালী করেছে, মানুষকে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে।

নারীবাদী ঘরানার উপন্যাসটি শুধু নারীদের ভেতর না, কোরিয়ার পুরুষ রাজনীতিবিদদের কাছেও খুবই জনপ্রিয়। দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতিবিদরা সমাজে নারীর অবস্থা বোঝার জন্য বইটি একে অন্যকে উপহার দিয়েছেন। এমনকি নারী নীতি তৈরির সময় এটা তাদের চিন্তাকে প্রভাবিত করেছে দারুণভাবে। ২০১৭ সালে কোরিয়ার লেফট উইং জাস্টিস পার্টির নেতা রো হে চ্যান প্রকাশ্যে প্রেসিডেন্ট মুন জে ইনকে এর একটা কপি উপহার দিয়েছিলেন। তিনি আশা করেছিলেন, মুন নারীদের জন্য বিশেষ কিছু পদক্ষেপ নিবেন যারা ফলে উপন্যাসের চরিত্র কিম জিইয়ং যে জীবন অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে গিয়েছে, তা যেন আর কারো জীবনে না আসে।

কোরিয়ার সমাজে নারীর প্রতি ধারণা ও লৈঙ্গিক বৈষম্যের বাস্তব চিত্র উঠে এসেছে এখানে। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ, নারীবাদী ও #মি-টু আন্দোলনকারীসহ বড় বড় কে-পপ তারাকাদেরও প্রভাবিত ও সচেতন করেছে বইটি। কিম জিইয়ং শুধু কোরিয়ার নয়, সমগ্র দুনিয়ার নারীদের প্রতিনিধি।উপন্যাসটি নিয়ে আলোচনা এখনো থামেনি, চলছে। এই উপন্যাসটি বাংলা ভাষার প্রথম অনুবাদ করেছেন কবি ও গদ্যকার মৃদুল মাহবুব। উপন্যাসের কাহিনী ও ভাষা সাবলীল ‍ও সুখপাঠ্য। বইটি প্রকাশ করেছে বৈভব প্রকাশনী। মূল্য ৪৫০ টাকা।