ভুলে গেছি সেঁওতির প্রেম

|| এক ||
আশ্বিনের রাতগুলো দীপ জ্বেলে আসে
আশ্বিনের রাতগুলো সরব হয়ে আসে, অথচ
এই ভর আশ্বিনেই গেলবার ভরাডুবি হয়েছিল
ধানীজমির বাগিচা
নতুন তপস্বিনীর সন্ধানে
কল্লোল তুলেছিল ভরত অযোধ্যা অভিমুখে
ভীষণরকম ডাগর চোখের চাহনিতে
ঘাড় উঁচিয়েছিল গোলাঘরের অতন্দ্র হুতোম
চোখে ছিল কতিপয় অবিশ্বাস!
অবিশ্বাসের ইকারুস! ছিড়েখুঁড়ে
ডানা মেলতে চেয়েছিল
এক আঁজলা বিশ্বাসের সিক্ততায়
কড়িকাঠ পুড়ে ছাই হয়
নতুন মেমোরিয়াম সন্ধানে
প্রস্থান করে অশরীরীরা
তল্লাটে তল্লাটে অমাবস্যা ঘেটে চলে
ডাকাবুকো এক শেয়াল
কাঁটা-জঙ্গল ঘেঁষে ঘোরাফেরা করে
লোভনীয় শিকার প্রতীক্ষায়
|| দুই ||
ইতিহাস টেনে ক্লান্ত হয় ভরদুপুর
ফিরতে চায় চল্লিশ ক্রোশ দূরের
সাজানো উপত্যকায়
যে ঘাটে জমা আছে কিছু কথা
টেনে ধরা গুটিকয়েক প্যাঁচানো লতা
সে ঘাটে কাঁসার-বাসনে ভেসে ওঠে
দীপ্ত এক আধোয়া মুখ
ভোরের ইসকাপন ছুড়ে দেয় সেঁওতিরা
হাতছানি দিয়ে ডাকে একগাছি শাঁখা
বাউণ্ডুলে মাঝি পাড়ি দিয়ে আসে
সাত-সমুদ্দুরের নিকোনো গহিন এক নদ
|| তিন ||
শকুন্তলা ভুলেছে প্রেম!
তাই সওয়ারি ফিরে চলে তার চেনা পথে
ভুলপথে হেঁকে চলা তেজি সোহরাব আজ
আত্মপরিচয়ে বিভোর হয়ে যায়; আথালিপাথালি
ঝড় উঠাতে চায় শৈশবের কাঞ্চনজঙ্ঘায়
হাসে গুলফাম!
হেসে হেসেই স্বাগত জানায় মাছরাঙা-রঙ
গ্রহণকালে বৈষ্ণবী-জীবন উপচে ওঠে
ক্ষ্যাপাটে-বৃষের জারক রসে
|| চার ||
মিলনোৎসবের ফ্যাস্টিভাল—
শীর্ণ নদীতেও বান বইয়ে দেয়
লুক্রেসির চিৎকার!
খোশমেজাজে চৌকাঠ উতরায়
অনুভূতিহীন একচোখা সাইক্লপস
কেঁপে ওঠে বাতিভরা আকাশ
আঁধার-সলতে উসকে দিয়ে
পৌঁছে যায় নির্ভাবনার অঙ্গরাজ্যে
নিশ্চল সময় তেতে থাকে
তাতে শারদীয় সুখ বিলীন হয়ে যায়
|| পাঁচ ||
বেলা বয়ে যায়
অপেক্ষার উপাখ্যানও ফুরিয়ে যায়
তবুও নবকুমার তার পথে থেকে যায়
নবকুমার—
আর কতদূর শিস কুড়ানো?
সময় গড়িয়ে বেলা যে প্রায়
গেরুয়া-বসন
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন