চোর ও অন্যান্য গল্প

অ+ অ-

 

কষ্ট বিক্রেতা

এম.এ. ফাইনালের মৌখিক পরীক্ষার যেদিন শেষ হলো, সেদিন দুপুরের পর ইমতিয়াজের প্রিয় শিক্ষক তার কাছে একটা সিগারেট চাইতে এসে কোনো কারণ ছাড়াই তাকে বললেন—‘কী করবে এখন, কিছু ভেবেছো? শোন, তোমাকে আমি চিনি; তোমাকে দিয়ে অন্য কিছু হবে না; তুমি কষ্ট বিক্রি করলে ভালো করতে পারবে; একদিন অনেক বড় কষ্ট ব্যবসায়ী হবে; কষ্টের ব্যবসা অনেক প্রফিটেবল

সে তার স্যারের কথায় এতোটাই প্রলোভিত হলো যে অন্য সব চিন্তা সরিয়ে রেখে কষ্ট বিক্রেতা হয়ে গেলো। সে ঘুরে ঘুরে, মানুষের কাছে গিয়ে তাদের কষ্টগুলো বুঝে, বাছ-বিচার করে, সেগুলো কিনে নিয়ে, অন্যদের কাছে বিক্রি করা শুরু করলো। একাজ করতে এসে ইমতিয়াজ নিজেও খুব অভিভূত হলো। সে আগে কখনও বোঝেনি যে মানুষদের কাছে এতো হরেক রকমের কষ্ট থাকতে পারে। কিছু কষ্ট আছে খুব সাধারণ, নিমেষেই দূর করা যায়; কিছু কষ্ট ঝেড়ে ফেলে দিতে বেশ বেগ পেতে হয়; আর কিছু আছে অসহনীয় কষ্ট যা একেবারেই সরিয়ে ফেলা যায় না; কেউ কিনে নিয়ে গেলে তা প্রশমিত হয়। কিছু সাদাকালো, কিছু রঙিন এবং কিছু আংশিক রঙিন কষ্টের সাথেও ইমতিয়াজের পরিচয় হলো।

অনেক মানুষের সাথে তার পরিচয় হচ্ছিল যারা অন্যের কষ্ট কিনে নিতে চায়; কষ্টগুলো কিনে সেগুলোর দিকে তাকিয়ে থেকে বিনোদিত হয়। এদের কাছেই সে কষ্ট বিক্রি করে। অনেক মুনাফা করে সে; কষ্ট বিক্রিতে লাভ অনেক। তার সেই স্যারের কথা মনে হয়। একবার ভাবে—‘স্যারের কি কোনো কষ্ট আছে? যদি থাকে, তাহলে আমি চড়ামূল্য দিয়ে নিতে চাই; স্যারের উপকার হবে; তারপর তার কষ্ট বিক্রি করে লাভের পুরোটাই স্যারকে দিতে চাই

একদিন তার কাছে এসে এক মেয়ে কষ্টের কথা বলে। সে কষ্টগুলো বিক্রি করতে চায়। ইমতিয়াজ বিশ্বাস করে না যে মানুষের এমন কষ্ট থাকতে পারে। সে আরো কথা বলে মেয়েটির সাথে। বুঝতে পারে যে এই কষ্ট সে কিনে নিয়ে কারও কাছে বিক্রি করতে পারবে না। মেয়েটির কষ্ট তার নিজের কাছেই রয়ে যাবে।

কষ্ট বিক্রেতা হিসেবে দেশব্যাপী তার নাম ছড়িয়ে পড়লে, এক আন্তর্জাতিক কষ্ট বিক্রয় প্রতিষ্ঠান তার সাথে যোগাযোগ করে। এদেশে তাদের শাখা খোলার জন্যে ইমতিয়াজকে অনুরোধ করলে সে রাজি হয়। এই প্রতিষ্ঠান নতুন অনেক ক্রেতা চায়; সবাই যেন কষ্ট কিনতে পারে তেমন একটা পরিস্থিতি চায়। ইমতিয়াজ রাজি হয়। সে তাদের কান্ট্রি-ডিরেক্টর হয়ে যায়।

তারপর থেকে ইমতিয়াজের আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি। কেউ মরে যাচ্ছে, সেই কষ্ট বিক্রি হচ্ছে; কেই ধর্ষিত হচ্ছে, সেই কষ্টের মুনাফা আরও অনেক বেশি। কেউ খেতে পারছে নাএই না খাওয়ার কষ্টগুলো খুব মামুলি, শ্যাম্পু-সাবানের মিনিপ্যাকের মতো। এসব নিয়ে তার ভাবতে ইচ্ছে করে না; বেশি মুনাফা পাওয়া যায় যেসব কষ্টে সেগুলোই তার চাই।

ক্রমে-ক্রমে তার গাড়ি হয়, বাড়ি হয়, বৌ হয়, সন্তান হয়। কিন্তু ইমতিয়াজের নিজের মনে অনেক কষ্ট বাসা বাঁধে। কিন্তু কষ্টগুলো সে বিক্রি করতে পারে না; কেউ কিনতে চায় না; আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকে কথা বলে সে। তারা বলেআমাদের এদিকে কেউ এসব কিনতে চায় না; ওগুলো তোমাদের ওদিকেই বেশি চলে

***

তেলেপোকা

একটা প্রলয় হয়েছে। সবকিছু ভেঙে পড়েছে। পুড়ে গেছে। প্রায় ধুলোয় মিশে গেছে। আমাদের সুন্দর অট্টালিকা, বাগান, তৈজসসব। মনে হয়েছিল আমাদের সূর্যটা ডোবার সময় অনেক সূর্য একসাথে জ্বলে উঠেছিল। সব ছাই হয়ে গেছে, কিন্তু কেমন করে হলো, তা আমি এখনও চিন্তা করতে পারছি না। মনে হয় এগুলো ইহলোকের পরের চিন্তা। কিন্তু আমি তো ছাইয়ের গন্ধ পাচ্ছি। সারা গায়ে ব্যথাও অনুভব করছি। চোখটা একটু একটু খুলতে চেষ্টা করছি।

কোনো শবদেহ দেখছি না, কিন্তু আমার চারিদিকে খান খান জনশূন্যতা। ধুলা এবং ছাই ছাড়া আর কিছুই নড়ছে না। এরই মাঝে সামান্য একটা নড়াচড়া আমার চোখে পড়ে; ঠিক আমার বুকের ওপরে, ডান পাশে। একটা তেলাপোকা। আহ, এই ধ্বংসলীলা পোকাটিকে মারতে পারেনি। হ্যাঁ, ঠিকই তো; তাই তো শুনেছিলাম; এমন ওলটপালটের পর শুধু তেলাপোকাই টিকবে। পোকাটি হামাগুড়ি দিয়ে আমার বুকের ঠিক মাঝখানে আসার চেষ্টা করছে। আমার মনের ভেতরে বেশ ঘৃণার ভাব এলো। বুকটা ঝাড়া দিয়ে, একটু নড়ে তাকে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করলাম। পারলাম না। পোকাটি আমার ডান বুকের চুড়ায় এসে বসল। একটু কাঁপছে মনে হলো।

তেলাপোকাটি বললোকি-গো মানুষ, কষ্ট হচ্ছে? আমারও হচ্ছে। তারপরও আমি নিজেকে টেনে টেনে তোমার কাছে এসেছি; তুমি ওঠো; তুমি বাঁচলে আবার সব জাগবে; মরে যেও না। তুমি বাঁচলে পৃথিবী বাঁচবে।

আমি প্রচণ্ডভাবে বিভ্রান্ত বোধ করলাম। তেলাপোকা কথা বলে! আমি তো জানতাম এই পোকাগুলো কীটপতঙ্গ, ধপ্ করে একটা বাড়ি দিয়ে এদের মেরে বালাই দূর করতে হয়। ইচ্ছে হলো আঘাতটা করি, কিন্তু এখন আমার গায়ে সেই শক্তিটুকুও নেই। আমি এখন ওর চোখ দেখতে পাচ্ছি। আমার চোখের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। একটু টলমল; কেমন যেনো অন্যরকম। আড় চোখে বাঁদিকে তাকালাম যেখানে আমার বাড়ি ছিল। বাড়িটা নেই, সব মাটির বুকে বসে গেছে। ঐ বাড়িতে আমি কত যে তেলাপোকা মেরেছি। কিন্তু ওদের চোখের দিকে কখনও তাকাইনি; আসলে এতো কাছ থেকে কোনো তেলাপোকা আমার দেখাই হয়নি। মনে হলো ওর চোখে বুদ্ধিমত্তার এক ঝলক দেখলাম যা আমি আগে কখনও দেখিনি।

তেলাপোকাটি আবারও বলে উঠলো—‘ব্যথা পাচ্ছো জানি, কিন্তু হাল ছেড়ো না; তুমি এই কষ্ট কাটিয়ে উঠতে পারবে। তুমি আবার এই সব নতুন করে তৈরি করতে পারবে; শুধু নিজের ওপর বিশ্বাস রাখো।

বিস্মিত হবার আর কিছু বাকি থাকলো না। একটা পোকা আমার সাথে একটার পর একটা কথা বলে যাচ্ছে। আমায় সাহস দেয়ার চেষ্টা করছে, সহানুভূতি প্রকাশ করছে, তাও আবার কথার মাধ্যমে! আমি কান খাড়া করলাম। চারিদিকে আরও অনেক পোকা আছে কিনা তা বোঝার চেষ্টা করলাম। শুনলাম, দশদিক থেকে আরও অনেক পোকামাকড় আমায় সাহস দিচ্ছে; আমি ওদের সবার কথা শুনতে পাচ্ছি। আমায় বাঁচতে আশা দিচ্ছে।

আমি শরীর ও মনের সব শক্তি সঞ্চয় করে উঠে বসলাম। তেলাপোকাটা আমার বুক থেকে ছাইয়ের মধ্যে পড়ে গেলো। আঙুল দিয়ে আলতো করে আমার কোলের মাঝে এনে বসালাম। তখনই মনে পড়লো, আমার ক্ষিদে লেগেছে। তার চোখ আবারও টলটল করছে। বুঝলাম, তারও ক্ষিদে পেয়েছে। কিন্তু তার চোখে এখন আনন্দ ঝরে পড়ছে। হাসছে বলে মনে হলো। পোকাটি আমায় জাগতে দেখে অনেক খুশি হয়েছে।

তেলাপোকাটি বললোতুমি পারবে

আমার পেটে তখন অনেক ক্ষিদে। আমার বাম হাত নড়ছে না; রক্ত থির-থির বেরুচ্ছে। আমি ডান হাত দিয়ে ওকে খামচে ধরে পোকাটিকে, গাল হাঁ করে, মুখের পুরে, দাঁত দিয়ে না চিবিয়ে একবারে গিলে ফেলতে চাইলাম। গলায় বেধে গেলো। কিছুক্ষণ কোঁৎ-কোঁৎ করে, ওয়াক-ওয়াক করে গিলে ফেললাম। আমার খুব ক্ষিদে লেগেছে।

***

শত্রু

আসাফুদ্দৌলাহ স্বপ্ন দেখছে। আসলে দুঃস্বপ্ন। ভীষণ ভয় পাচ্ছে। বোবায় ধরলে মানুষের মুখ দিয়ে যেমন যান্ত্রিক শব্দ বের হয় আসাফ তেমন শব্দ করেছে। সে দুঃস্বপ্নান্তরে জানতে পারে, তার নাকি এক শত্রু আছে এবং সেই শত্রু তাকে বান মেরে এক কাপালিককে তার কাছে পাঠাচ্ছে। সে দেখতে পাচ্ছে কাপালিক আসছে। সেই আত্মা আসাফুদ্দৌলাহকে অবশ করে তার মনোদৈহিকতাকে দখল করে নিয়ে ধীরে ধীরে কষ্ট দিয়ে তাকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চায়। আসাফুদ্দৌলাহ কম্পিত হয়ে আবারও যান্ত্রিক শব্দ করে।

ঘুমটা ভাঙলে সে একটু স্বস্তি পায়, তবে আপিসে গিয়েও সারাদিন কাপালিকের ভয়টা তার ভেতরে কুয়াশার মত ভর করে থাকে; কাজে মন বসে না। দুঃস্বপ্নটা তাকে সারাদিন তাড়িয়ে বেড়ায়। কোনো মতে কাজ সেরে বাড়ি ফেরে। একটু বিশ্রাম নিচ্ছিল, আধঘণ্টা না যেতেই দরজায় টিংটং শব্দে আসাফুদ্দৌলাহকে উঠে যেতে হয়। নীচ থেকে প্রহরী এসে হাত বাড়িয়ে একটা কাগজের ব্যাগ দিয়ে বলেস্যার, পার্সেল আসছে

আসাফ জানতে চায়কে পাঠিয়েছে?

স্যার, কি যেন নাম বললো! প্রহরী আবার চিন্তা করে। নাম বলতে পারে না।

কে দিয়ে গেছে?’—আসাফ আবার জানতে চায়।

স্যার, এক ড্রাইভার গাড়িতে এসে দিসে; বলসে আপনাকে দিতে।

আসাফুদ্দৌলাহ ব্যাগের দুই কিনার ধরে হালকা-হ্যাঁচকা টান দেয়; বেশ কয়েকটা স্টেইপলার লাগানো থাকায় ক্ষ্যাত করে একটা শব্দ হয়। ব্যাগের মধ্যে একটা শার্ট দেখতে পায় আসাফ। খুব সুন্দর একটা শার্ট; অসাধারণ; এমন ডিজাইন সে কোনো দোকানে দেখেনি। এখনই পরতে ইচ্ছে হয়। তবে কে পাঠালো তার নাম নেই। কোনো বিজনেস কার্ড বা কোনো চিরকুট খুঁজে পাওয়া যায় না।

তখনই আবার সেই ভয়ের চাদর তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। মনে হয় সে এখনই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আগের রাতে দুঃস্বপ্ন এবং তার পরদিনই বেনামী উপহার কাকতালীয় হতে পারে না; নিশ্চয়ই এক যোগসূত্র আছে। তার শত্রু কোনো একটা বস্তু পাঠিয়ে তার সাথে একটা যোগাযোগ স্থাপন করতে চাইছে। এই শার্ট পরলেই তার ওপর আঘাত আসবে। এটা পরিয়ে কেউ তাকে প্রেতীকরণ করতে চাইছে। প্রহরীকে চলে গেলে সে কাগজের ব্যাগটা দরজায় বাইরে রেখে দেয়।

এই শার্ট সে নেবে না, এই কাপড় কাছে থাকলেই সে সেই প্রেতের বেষ্টনীতে আটকে যাবে। আসাফুদ্দৌলাহ শুনেছে এমন কোনো বস্তু পেলে তা ফেলে দিতে হয়; মাটিচাপা দিতে হয়; পানিতে ফেলে দিতে হয়। কিন্তু এই শার্টটা ছুঁড়ে ফেলতে তার মায়া লাগে। শার্টটা তার ভালো লেগেছে। সে এও শুনেছে যে তার নিজের কোনো শত্রুর কাছে এটা পাঠিয়ে দিলে অশুভ আত্মাটা তার দিকে চলে যাবে। কিন্তু, আসাফুদ্দৌলাহ ভাবে, সে তো কাউকে শত্রু মনে করে না; তার কোনো শত্রু নেই। শার্টসহ ব্যাগটা দরজার বাইরে রেখে অনেক চেষ্টা করে কিছুটা ঘুমুতে পারে।

আজ রাতে কোনো স্বপ্ন দেখে না সে। তবে একটা যান্ত্রিক কণ্ঠ শুনতে পায়। বলছেকিরে হারামজাদা, তোর নাকি কোনো শত্রু নাই? তাইলে ভয় পাইলি ক্যান? শোন, তোর শত্রু তুই নিজেই।

***

চোর

আমি একজন চোর। খুব দক্ষ চোর। আমার পেশাটা অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ মনে হতে পারে তবে আমার কাছে তা বেশ আনন্দের। একটা নোংরা কাজও মনে হতে পারে কিন্তু কাউকে না কাউকে তো এটা করতেই হয়। আমি মানুষের জীবন থেকে সময় চুরি করি, ওদের মুহূর্তগুলো নানা ফন্দি ফিকির এঁটে ছিনিয়ে নিয়ে ওদের জীবন থেকে আসল কাজগুলো করার সময় কমিয়ে দিই। ওরা বোঝেই না যে আমি ওদের মূল্যবান মুহূর্তগুলো কেড়ে নিয়ে ওদের কতটা ক্ষতি করছি। ওরা চিন্তাই করে না যে সময়কে কেনা যায় না, বিক্রি করা যায় না এবং কারও কাছ থেকে ধারও নেয়া যায় না।

ঠিক এখানেই আমি কাজটা সারি। আমি ওদের অকাজে ব্যস্ত রাখি, ওদের বিভ্রান্ত করে রাখি। আমি এমন করে ওদের ঘাড়ে অর্থহীন সব দায়িত্ব ন্যস্ত করে ব্যস্ত রাখি যে ওরা টেরও পায় না। আমি মানুষজনের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো এমন করে ভুলিয়ে দিই যে তারা আরও খুশি হয় যে তাদের সেই কাজগুলো করতে হচ্ছে না। এবং তারা ভাবতে ভুলে যায় যে জীবন থেকে সময় হারিয়ে যাচ্ছে।

ওদের শহরের ঠিক মাঝখানে একটা প্রকাণ্ড টাওয়ার আছে এবং তার সাথে একটা মস্ত বড় ঘড়ি আছে, যা জীবন থেকে সময় হারিয়ে যাওয়ার একটা প্রতীক হিসেবে কাজ করতো। আমি সেই ঘড়িটার ঢং-ঢং ঘণ্টা বাজার শব্দকে বোবা করে দিয়েছি যেন ঐ শব্দটা মানুষদের আর সময় মনে করিয়ে দিতে না পারে।

প্রথমে ওরা লক্ষ্য করেনি। কিন্তু যখন দেখলো ওদের দিনগুলো অনেক লম্বা হয়ে গেছে, ওরা এতো অকাজ করছে কিন্তু সময় শেষ হচ্ছে না, তখন ওদের মনে সন্দেহ জাগে। ওরা আমার সম্পর্কে জানতে পারে, কেউ কেউ আমি চোরকে চিনেও ফেলে। আমাকে পাকড়াও করার চেষ্টা করে। আমাকে চেনার পর তারা নিজেদের জীবনে একটা ভারসাম্য আনতে চেষ্টা করে। কিন্তু আমার সাথে পারবে কেমন করে? আমিতো সময়-চোর, আমার কাজই হচ্ছে ওদেরকে অকাজে ঠেলে দেয়া। মানুষ তাদের আসল কাজগুলো করুক আমি তো তা হতে দিতে পারি না। আমি সময় চুরির জন্যে আরও উন্নত প্রযুক্তি আবিষ্কার করি এবং তা অতি স্বল্পমূল্যে বাজারে ছেড়ে দিই। ম্যাজিকের মত কাজ করে। ওরা আমার কথা ভুলে যায়; ওরা সময়ের মূল্য আবারও ভুলে যায়।

এবং আমি, অতি মনোযোগের সাথে ও নিরাপদে, সময় আত্মসাতের কাজ চালিয়ে যাই।

***