অসময় ও অন্যান্য কবিতা
সময় এবং অক্ষরের গান
উঁহু, এভাবে হবে না!
এভাবে হবে না আর
পাল্টে গেছে, পাল্টে যাচ্ছে সব
বর্ষাও নেমেছে পথে, প্রতিপক্ষহীন
চোখে তার কালো ঘুড়ি, স্থির
মিশে আছে দূরত্বের ঝাঁঝ মেঘে ও রোদ্দুরে।
আলতামিরার গুহাচিত্র ছেড়ে যে বৃষ্টিরা পড়েছিল
নির্বাণ সৈকতে, তারা কি উড়ন্ত আজ?
পাড়ি দিচ্ছে জল?
মেঘময় সোনালি ঋতুর বিল?
বর্ণময় আষাঢের দিনে
সিঁদুরে স্বপ্নের তল কতোটা গভীর হলো
দেখেছো কি আবারো নতুন করে?
থিতানো জৌলুশ রক্তপিপাসুর ডাকে
জ্ঞানহীন হতে পারে, হোক
তুমিতো হিমাঙ্ক, মদিরতাহীন
নির্ভার নির্জন
গলনাঙ্কের বৈঠায় জোয়ারের ক্রুশ
তুমিও পেয়েছো টের!
তুমিও দেখেছো
দাপুটে বর্ষায় পুড়ে যাচ্ছে ঘর
সরে সরে যাচ্ছে সব লিপির অক্ষর।
দল ও মত
আমি কেউ নই তোমাদের!
এমনকি কারো!
পেরুতে দেবে না? বলো?
লাল নীল শব্দাবলীর
কতো শতো অনাহুত স্রোত?
বারান্দায় ফোটা দোলনচাঁপা অতো বাহারি নয়, জানি
শোকের পাঁজরে টুং টাং বাজে তার নিঃশব্দ সৌরভ
বৃহস্পতি আর শনি গ্রহদুটি
শত বছর পরেও কাছে আসে
যদিও ভিন্ন তাদের নিজস্ব পথ।
আমি তোমাদের দলের নই
এমনকি মতেরও...
মায়াবী পূর্ণিমা রাতে সমুদ্র জেগে ওঠে ভয়ানক!
নিঃশব্দে পেরুতে চাই
লাল-নীল শব্দাবলীর অদেখা অসংখ্য স্রোত।
শ্রাবণ ও বিশ্বায়ন
ছায়ানটে জুড়াচ্ছে বাতাস একা একা
রোদ ওঠে, আলো নিভে যায়
পাল তুলে চলে যায় সৃজনের ধারা
দুঃখের কমলা রঙে কার ঠোঁট কতোটা রঙিন
সে কথাও বলে যায়
মরুময় শ্রাবণের দিন।
আমিও শ্রাবণধারা
প্রতিপক্ষ মন
কালো চোখে শোকগাঁথা
সহস্র মনন
তোমার শরীরে সখি রাধার ক্রন্দন
কৃষ্ণ বোঝে শুধু
বিশ্বায়ন, বিপণন।
প্রতি প্রশ্ন
এখানে পাবে কি কিছু?
বলো?
এইবেলা?
নগর কাঁপানো আর্তস্বর
কেঁপে কেঁপে চলে গেছে বহুদূর
নিশানা রঙিন হোক
আয়ু তার সাদাকালো
আমি বলি, এখানে এসো না তুমি
এখানে, স্বপ্ন-জঙ্ঘায় ভাসে আয়ত চোখের ক্রোধ।
অসময়
তড়পানো সত্যগুলো আমাকেও পড়তে দিও
জন্মান্ধ বালিকা আমি নই
শব্দহীন সুখের পালক গুঁজে
ভেবো না কখনো নার্সিসাস হবো
করাত কলের পাশে পড়ে থাকা আমার মুমূর্ষু চিৎকার
আজ উর্ধ্বমুখী হলে
ক্ষতি কার?
ঘুমিয়েইতো ছিলাম, জেগেছি হঠাৎ
স্রোতের বল্লম রেখা ধরে আমিও দাঁড়াবো
অন্তত একবার
তুমিও কি দাঁড়াবে
আজ এই বেলায়?
প্রাচীনগন্ধী
খরগোশের পিঠ দেখলেই
আমার মাও সেতুংয়ের কথা মনে পড়ে যায়
তার কবিতা ও স্বপ্ন পেরিয়ে
ইতিহাসের অন্তর্জালে
কেন জানি কয়েকটি শুঁয়ো পোকার চিহ্নই কেবল খুঁজে পাই
ভোরের আকাশ দেখা হয় না কতোকাল
বঙ্গোপসাগরের কূল ঘেঁষে সূর্য ওঠার গল্পে
ভর করে প্রাচীন আরাকানি স্রোত
বাংলার সুবেদার শাহ শুজা কিংবা মীর জুমলার কাহিনি কথা
রাতের দুকূল বেয়ে রমনার কালী মন্দিরের পাশে হাঁটু গেড়ে বসে
ঠিক তখনই চোখের লালায় দেখি মুদ্রার ওপিঠ
আজ সাদা খরগোশের পিঠে ঈশ্বরের খুন
তরতাজা
অরণ্যের অন্ধ চোখ নিবিড়তা গোপন করে কাকে খোঁজে?
জানো? কেউ?
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন