বিজ্ঞাপনে ঢেকে যাচ্ছে রিকশাচিত্র
অবাণিজ্যিক রিকশাচিত্র এবং বিজ্ঞাপন বাণিজ্য
২০১৫ সালে রিকশায় সেঁটে দেওয়া বিজ্ঞাপনের নমুনা © ছবি: লেখক
গত দশকের শুরুর দিকে খুবই হালকা চালে কিছু বিজ্ঞাপন রিকশাচিত্রে দেখা যায়। যাকে বিশেষ করে শনাক্ত করার মতো কোনো কারণ ঘটেনি। বিজ্ঞাপনগুলো মূলত ছিল কাগজের। কাগজের বিজ্ঞাপন ব্যক্তিগত বাড়ির দেয়ালে হঠাৎ করে সেঁটে চলে যাওয়ার মতো বিষয় ছিল সেটি। এর সাথে রিকশাচালক বা মালিকের আর্থিক আয়ের কোনো সম্পর্ক নেই।
২০১৫ সালের দিকে বিজ্ঞাপনের এই প্রবণতা লেখকের কাছে বিশেষভাবে চোখে পড়তে শুরু করে। মেয়র নির্বাচনের প্রচারণার লিফলেট, কোচিং সেন্টারের বিজ্ঞাপন, বিভিন্ন এনজিওর সচেতনতা প্রকল্পের বিজ্ঞাপন হরহামেশাই দেখা দিতে শুরু করে। কাগজের ও ডিজিটাল প্রিন্টের বিজ্ঞাপন এ সময়ে ব্যবহৃত হতে দেখা যায়। কাগজের বিজ্ঞাপন রিকশাচিত্রের ওপর সেঁটে দেওয়া হতো। রিকশাচিত্রের টিনের প্লেটে বা রিকশা বডির পেছনে সেঁটে দেওয়া হতো সেসব বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপনদাতাদের এই আচরণের মধ্যে রিকশাচিত্রের প্রতি কোনো সচেতন দৃষ্টিভঙ্গি, এমনকি অন্যের সম্পত্তি ও রুচির প্রতি কোনো সম্মান চোখে পড়ে না। সরকারি সহযোগিতায় বেসরকারি প্রকল্পের বিজ্ঞাপন থেকে শুরু করে হাউজিং কোম্পানিগুলোর বিজ্ঞাপনও ২০১৫ সালে দৃষ্টি কাড়ে। তবে এর সংখ্যাগত পরিমাণ এবং বিজ্ঞাপনদাতাদের আগ্রহ কোম্পানির বৈচিত্র্য বিবেচনায় এখনকার তুলনায় কম ছিল বলেই মনে হয়।
২০১৫ সালে রিকশায় সেঁটে দেওয়া বিজ্ঞাপনের নমুনা © ছবি: লেখক
গত কয়েক বছর ধরে এই প্রবণতাটি খেলাচ্ছলে [রিকশা শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট শ্রেণির দৃষ্টিভঙ্গি বিবেচনায় নিলে] সুদৃঢ় হয়েছে। যাকে সরাসরি আখ্যায়িত করা যায় বিজ্ঞাপন বাণিজ্য বলে। এই বিজ্ঞাপন বাণিজ্য রিকশাচিত্রের সাথে কোনো সংলাপ তৈরি করেনি, বরং অস্বীকার করেছে। প্রথম দিকে নানা ছোটখাটো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এ কাজটি করত। তার মধ্যে স্কুল বা কলেজের বিজ্ঞাপন বেশি চোখে পড়ত। অন্য বিজ্ঞাপনের পরিমাণ ছিল কম। সবচেয়ে বড় কথা, পায়ে চালিত রিকশার ব্যবহার সীমিত হয়ে আসা এবং অটো রিকশার ব্যবহার বাড়ার কারণে গত দশকে রিকশাচিত্রেও আরেক ধাপ অনীহা তৈরি হয়, যেহেতু পায়ে চালিত রিকশা ব্যবসায়িক কারণে এবং শ্রমের বিবেচনায় রিকশা চালকদের কাছে আগ্রহ হারাতে থাকে। পুরান ঢাকা, মিরপুর এবং তেঁজগাওকেন্দ্রিক রিকশা গ্যারেজগুলোতে এখনও পায়ে চালিত রিকশায় কিছু চিত্র চোখে পড়ে। তবে সবচেয়ে বেশি চিত্রিত ও অলংকৃত রিকশা এখনও পুরান ঢাকার রিকশা মালিকদের রিকশাতেই দেখা যায়।
২০১৫ সালে রিকশায় সেঁটে দেওয়া বিজ্ঞাপনের নমুনা © ছবি: লেখক
কিন্তু করোনা-পরবর্তী বাংলাদেশে অর্থনৈতিক বিপর্যয় রিকশাচিত্রেও দৃশ্যমান। পুরান ঢাকার ঢাকাইয়া বডির কিছু রিকশা ছাড়া আর নতুন করে চিত্রিত রিকশা ঢাকায় বিরল হতে শুরু করেছে। এই শতকের প্রথম দুই দশকে ছাপাই রিকশাচিত্রের যে বাহুল্য চোখে পড়ত, তাও আর তেমন নেই। ফলে মলিন চিত্রের জায়গায় চোখে পড়ছে বাহারি বিজ্ঞাপন। আগের গুটিকয়েক বিজ্ঞাপন এখন আর নেই। এখন বলতে গেলে কোমর বেঁধে রিকশার পেছনের শরীর ও রিকশা প্লেটের জায়গায় ব্যাপক হারে বিজ্ঞাপন দেওয়ার কাজে নেমেছে বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান।
রিকশাচিত্রের প্লেটবিহীন রিকশার সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। বাড়ছে মরচে পড়া, ভেঙে কোনো রকমে লেগে থাকা রিকশার প্লেট। সজ্জাবিহীন এসব রিকশায় ক্রমেই বাড়ছে বিজ্ঞাপনের বৈচিত্র্য। সেখানে ব্রিটিশ কাউন্সিল থেকে শুরু করে নগদের বিজ্ঞাপনের হিড়িক দেখা যায়। আছে পাড়ায় পাড়ায় গড়ে ওঠা অসংখ্য অনলাইন সার্ভিস দেওয়া প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন।
চিত্র: ২০২৩ সালে রিকশায় সেঁটে দেওয়া বিজ্ঞাপনের নমুনা © ছবি: লেখক
যারা কাগজের বিজ্ঞাপন সেঁটে দিয়ে যায়, তারা রিকশাচিত্রের ওপরে দিয়ে যায়। তার ধরনটি কেমন, তা এক রিকশাচালকের কথায়, বিজ্ঞাপনদাতার ও গ্যালারিচালকের [রিকশাকে যদি চলমান গ্যালারি বিবেচনা করি] সম্পর্কের ও বোঝাপড়ার ধরনটিও পরিষ্কার হয়। একটি রিকশায় বিজ্ঞাপন ছিঁড়ে ফেলার পরও কিছু অংশ লেগে ছিল। এটা কী ছিল জিজ্ঞেস করতেই পেছনের রিকশার চালক বললেন—'এইডা কিছু না, পোলাপান শয়তানি কইরা লাগায়া রাইখ্যা গেছে।'
বিজ্ঞাপনের জন্য যেখানে ঢাকা শহরে এক ইঞ্চি জায়গা মাগনা পাওয়া যায় না, সেখানে চলমান এই বাহনে কোনো বিনিয়োগ ছাড়াই বাণিজ্য করছে বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। করপোরেট পণ্যের বিজ্ঞাপন থেকে শুরু করে মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নগদ বা বিভিন্ন করপোরেট বিজ্ঞাপনও এখানে অনায়াসে সেঁটে দেওয়া হয়েছে।
পূর্ববর্তী একটি গবেষণায় দেখেছিলাম, রিকশা চালক [যিনি শুধু চালক, মালিক নন] রিকশায় কী আঁকা আছে, তা সম্পর্কে অবহিত নন ঠিকঠাক। এ বিষয়ে খেয়াল করার প্রয়োজনও তারা মনে করেননি। কার্যকারণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা সে লেখায় [ঢাকার বর্তমান রিকশাচিত্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পত্রিকা, জুন ২০১৯] করেছি।
চিত্র: ২০২৩ সালে রিকশায় সেঁটে দেওয়া বিজ্ঞাপনের নমুনা © ছবি: লেখক
মোদ্দা কথা হচ্ছে, এই বিজ্ঞাপনের সাথে রিকশাশিল্পের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট যে শ্রেণিগুলো [রিকশা মালিক, রিকশা চালক, রিকশা বডি মিস্ত্রি, রিকশাচিত্রী, রিকশার ক্লথ নকশা শিল্পী] আছে, তাদের কারও কোনো সম্পর্ক নেই। অর্থাৎ, বিজ্ঞাপনের জন্য যেখানে ঢাকা শহরে এক ইঞ্চি জায়গা মাগনা পাওয়া যায় না, সেখানে চলমান এই বাহনে কোনো বিনিয়োগ ছাড়াই বাণিজ্য করছে বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। করপোরেট পণ্যের বিজ্ঞাপন থেকে শুরু করে মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নগদ বা বিভিন্ন করপোরেট বিজ্ঞাপনও এখানে অনায়াসে সেঁটে দেওয়া হয়েছে।
অর্থাৎ, রিকশার শরীর পাবলিক স্পেসের মতো বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। যদিও রিকশা ব্যক্তিগত সম্পত্তি। প্রশ্ন হচ্ছে, কীভাবে এটা সম্ভব হচ্ছে? রিকশাশিল্প সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর কাছ থেকে কেন এই কাজে কোনো বাধা বা অর্থ আদায়ের প্রশ্ন আসেনি? আর রিকশাচিত্রের জায়গা দখল করে যে বিজ্ঞাপন বাণিজ্য গত দশকে দৃশ্যমান ও বিস্তার লাভ করেছে, তা কি শুধু ঢাকা শহরেই ঘটেছে? রিকশাচিত্রের ওপর দখলদার হয়ে ওঠা বিজ্ঞাপনকে কেন্দ্র করে এসব প্রশ্ন অনায়াসে চলে আসে।
রিকশার শরীর পাবলিক স্পেসের মতো বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। যদিও রিকশা ব্যক্তিগত সম্পত্তি। প্রশ্ন হচ্ছে, কীভাবে এটা সম্ভব হচ্ছে? রিকশাশিল্প সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর কাছ থেকে কেন এই কাজে কোনো বাধা বা অর্থ আদায়ের প্রশ্ন আসেনি? আর রিকশাচিত্রের জায়গা দখল করে যে বিজ্ঞাপন বাণিজ্য গত দশকে দৃশ্যমান ও বিস্তার লাভ করেছে, তা কি শুধু ঢাকা শহরেই ঘটেছে?
প্রথম প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে শিল্পের সাথে এই শ্রেণির সম্পর্কের দিকটি খতিয়ে দেখলে। ‘ঢাকার বর্তমান রিকশাচিত্র’ প্রবন্ধে লিখেছিলাম যে, ‘...রিকশাচালক, মালিক ও শিল্পী—তিনটি শ্রেণিই ঢাকা শহরে—নবজন্ম নিয়েছে গ্রাম ছেড়ে কাজের সন্ধানে শহরে আসা লোকদঙ্গল থেকে।’
তাই রিকশাচিত্রের জন্ম ও বিশেষ করে বর্তমান পর্যন্ত বিস্তারের পেছনে কারণ হিসেবে লিখেছিলাম—‘... রিকশাচিত্রের সম্ভাব্য কার্যকারণগুলো হতে পারে: সাধারণ লোকের সহজাত সৌন্দর্যবোধ, যা লোকশিল্পেরও অন্যতম মৌলিক প্রবণতা। এই সৌন্দর্যবোধকে কেবল সাধারণ লোক তার পরিবর্তিত নাগরিক পটভূমিতে প্রাপ্ত নগর পণ্যের উপরিতলে প্রকাশ করতে চেয়েছে। যদিও উৎপাদন থেকে বাজার এই পুরো প্রক্রিয়ার সাথে শিল্পীর একক সম্পর্কটি এখানে ছিন্ন হয়ে পড়ে বর্তমান শিল্পবাজারের অ্যাসেম্বলিং বৈশিষ্ট্যটির মধ্য দিয়ে। কিন্তু একই গ্রামীণ পটভূমি থেকে আসা, একই গ্রামীণ ও স্থানিক সংস্কৃতির উত্তরাধিকার লোকই রিকশাশিল্পের নানা অংশে জড়িয়ে আছে। তাই রিকশাশিল্পের সামগ্রিকতায় রিকশাচিত্রকে একটি সামষ্টিক শিল্প বা নাগরিক লোকশিল্প হিসেবেই বিবেচনা করা যেতে পারে।’
আর এই গ্রাম্য জীবনের শিল্পধারণা বহনকারী লোকেরা কখনও ব্যবহারিক বা প্রয়োজনের বাইরে শিল্পকে আলাদা করার সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত নয়, ফলে শুধু ‘শিল্প’ তারা বিক্রি করতে শেখেনি। এই বাজার রাজনীতি সম্পর্কে লোকের অজ্ঞতাই বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো কাজে লাগাতে শুরু করেছে গণপরিসরে চলমান রিকশার পেছনের স্পেসকে কেন্দ্র করে।
২০২৩ সালে রিকশায় সেঁটে দেওয়া বিজ্ঞাপনের নমুনা © ছবি: লেখক
অন্যান্য সকল বিষয়ের মতো রিকশাশিল্পেরও মোটিফ, বৈশিষ্ট্য, অঙ্কন পদ্ধতির পরিবর্তন ঘটে চলেছে। আর এই পরিবর্তন বাজারের চাহিদার সমানতালে ঘটে। বাজারের সাথে অর্থনৈতিক-রাজনীতি এবং রাজনৈতিক-সংস্কৃতির সম্পর্ক রয়েছে। এসব কারণে গবেষণা বলছে, রিকশার সাংস্কৃতিক রূপটিও রাজনৈতিক। তাই সাধারণ মানুষের এই সাংস্কৃতিক রূপটি নতুন বাজার ব্যবস্থার সাথে কোনো সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারেনি। যদিও শিল্পশিক্ষার ক্ষেত্রে নাগরিক-প্রাতিষ্ঠানিক চারুশিল্পীরা প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে স্থানিক ‘ঐতিহ্য’ বিবেচনা করে একে নিজেদের শিল্পভাষা তৈরিতে কাজে লাগিয়ে আসছেন।
রিকশাচিত্রীরা তাদের ছবি বিক্রি করেন ওজন দরে। অর্থাৎ, টিনের খণ্ডটির ওজন অনুযায়ী দাম দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে ছবি এখানে বাজারের প্রশ্নে অনুপস্থিত। ছবির ভাষা এখানে শখের হাঁড়ির মত শৌখিন। এই শৌখিনতা প্রধানত রিকশা চালকদের কাছে তেমন গুরুত্ব পায় না। গ্যারেজ থেকে যখন তারা রিকশা নেন, তখন কোনটা চালাতে সহজ হবে সেই রিকশাকেই গুরুত্ব দেন।
রিকশাকেন্দ্রিক চিত্র গণপরিসরে প্রদর্শিত গণের চিত্র। ফলে এর বিষয় এবং প্রাচুর্য দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, যা রিকশার বাজারের সাথেও সম্পর্কিত। তাই ঢাকার বাইরের ব্যাটারিচালিত রিকশায় সাধারণত বিজ্ঞাপনের চেয়ে রিকশা শিল্পের নিজস্ব ধরনটি বেশি চোখে পড়ে। ঢাকার বাইরে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের বাহার চোখে পড়ে রিকশায় নয়, ব্যাটারিচালিত অটো এবং সিএনজিতে।
ফলে রিকশা আর্ট তুলনামূলক ক্ষণিক, বাজারমূল্যবিহীন ও রিকশামালিকদের শখের অংশ হয়ে থাকে প্রত্যক্ষে। ফলে এই রিকশা চিত্রের জায়গায় কেউ যদি দাঁতের মাজন, বা ইন্টারনেটের বা কোনো ক্লিনিকের বিজ্ঞাপন সেঁটে দিয়ে যায়, তাতে মালিক বা চালক কেউই আপত্তির কিছু দেখেন না। বরং তার নিজের একটা প্লেট লাগানোর বদলে অন্য কেউ লাগিয়ে দিচ্ছে এটাকেই একটা বাড়তি পাওনা হিসেবেও অনেকে দেখেন। যা মৌলিকভাবে রিকশাশিল্পের প্রতি সংশ্লিষ্ট বর্তমান শ্রেণিগুলোর দৃষ্টিভঙ্গিকেই উন্মোচিত করে।
ঢাকার রিকশার সাথে কলকাতার খুবই সীমিত পরিসরে টিকে থাকা রিকশার একটা তুলনামূলক বিচার করার সুযোগই সীমিত। ঢাকায় রিকশা ব্যবহারের পরিধি বিবেচনায় সে আলোচনা প্রায় অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে। তারপরও একটি নমুনা ছবি নিচে দেওয়া হলো, সুযোগ পেলে সাধারণত বিজ্ঞাপন যে সবকিছু ঢেকে দিতে চায়, তার নমুনা হিসেবে।
২০১৬ সালে কলকাতার রিকশায় বিজ্ঞাপনের এই ধরন চোখে পড়ে। ছবি: টুম্পা
বাংলাদেশের অন্যান্য জেলায় বা বিভাগে রিকশার ব্যবহারের ধরনটিই পাল্টে গেছে। পায়ে চালিত রিকশা ঢাকার বাইরে বিরল। ইঞ্জিনচালিত রিকশাই মূলত চোখে পড়ে। ইঞ্জিনচালিত রিকশার বাণিজ্যিক দিক ভালো হওয়ায় এর সজ্জার দিকটিও নতুন করে রিকশাচিত্রকে টিকিয়ে রেখেছে, ঢাকার বাইরে অন্তত। তার আলাদা কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে এলাকাভেদে, যা নিয়ে স্বতন্ত্র একটি লেখা লেখার ইচ্ছে আছে।
রিকশাকেন্দ্রিক চিত্র গণপরিসরে প্রদর্শিত গণের চিত্র। ফলে এর বিষয় এবং প্রাচুর্য দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, যা রিকশার বাজারের সাথেও সম্পর্কিত। তাই ঢাকার বাইরের ব্যাটারিচালিত রিকশায় সাধারণত বিজ্ঞাপনের চেয়ে রিকশা শিল্পের নিজস্ব ধরনটি বেশি চোখে পড়ে। ঢাকার বাইরে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের বাহার চোখে পড়ে রিকশায় নয়, ব্যাটারিচালিত অটো এবং সিএনজিতে। বিজ্ঞাপনের প্রকরণ বলছে, সেখানেও ব্যক্তিগত সম্পত্তি বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত হয়, পণ্য বাণিজ্যনীতির অজ্ঞতার কারণেই। এসব সিএনজি গণপরিবহন হিসেবে এক জেলা থেকে আরেক জেলায় যাতায়াত করে থাকে। সেইসব বিজ্ঞাপনের গল্প অন্য কোনো লেখায় হবে।
২০০০/২০০১ এ কিছু ভারতীয় স্থানীয়দের সাথে পার্টনারশিপে বিজ্ঞাপনী সংস্থা তৈরি করেছিলো। তাদের প্রকল্পটি ছিলো- বাসে, রিক্সায় বিজ্ঞাপন সেটে দেয়া। সে সময় থেকেই একটু একটু করে এখন 'মুখ ঢেকে গেছে বিজ্ঞাপনে'
নাতা
আগস্ট ২৬, ২০২৩ ০৫:৫৬