চক্রকুল ও অন্যান্য কবিতা
দ্বিতীয় বারের সমুদ্র
দ্বিতীয়বারের মতো তোমার সাথে একসাথে ঘুরতে গেলাম। সমুদ্রে ঢেউয়ের গভীরে দুজনে হারালাম সমুদ্র স্নানে। মেঘের কোলে শেষ গোধূলির সূর্যাস্ত আভায় আমাদের আলিঙ্গন ছিল চুম্বনের কামনায়।
তোমার সাথেই সারাদিনের খুনসুটি, কাঁচের ভেতর মাছেদের চোখগুলো যেন আরো অদ্ভুতময়, অন্ধকারের বালিতে শুয়ে লাল কাঁকড়ার মধুর গুঞ্জনে মাছের স্তনের ভেতর তোমার রোমান্স জেগেছিল, আমাকে ধরে রেখেছিলে অর্ধচাঁদের রেখার চারপাশে, একটি শুকতারা আমাদের ভালবাসা দেখছিল।
দ্বিবোধ
আমার শরীরের ভেতর
কখনও কখনও আরেক শরীর
তার কলকাকলি,
রোদেলা আকাশে
উড়ন্ত পাখির গান,
তার কান্নাতে শব্দবুলি
ভীষণ বেদনা
রাত গভীরে যন্ত্রণা,
নেড়ি কুকুরের চিৎকার
হাসিমাখা মুখের রেখাতে
ভালবাসার শীৎকার
প্রতিটা ছন্দে
যেন পৌরাণিক বেদনা
অনুভূতির কাঁপনে
স্বর্গীয় আলিঙ্গন
আকাশ পাতাল ফুঁড়ে হইচই
আরেক শরীরের আর্তনাদ
কুয়াশার রাতে মাটির কান্নায়
অশ্রুরুদ্ধ চোখের তারা
হাসিমুখগুলো অপেক্ষার পেন্ডুলাম
একটি কান্নামাখা মুখ
এসে প্রাগৈতিহাসিক বৈকুণ্ঠের লীলা সাজাল
সবুজ ভালবাসার বন্ধনে।
চক্রকুল
তোমার শীতল বালুকণারা মিলেমিশে সোঁদা হয়
দেয়ালের গায়ে এঁকেবেঁকে গ্রাফিতি ভরে যায়
তোমার শারীরিক আন্দোলনে ফুলের গর্ভ প্রসন্ন
প্রজাপতির গানে সকাল ঘিরে কেটে যায় মোহচূর্ণ
আমার ব্যর্থ সকালে স্বার্থক হাসিতে থুতনি ঢেকে কাঁথায়
হয়তো বা মেরুদণ্ড বেঁকে পিপাসার ভারে নুয়ে পড়তে চায়,
যখনি আরেকটি সকাল ঘুরে আসে দেয়াল জুড়ে গর্ভফুল
আমরা প্রতিবার ব্যর্থ জীবনকংক্রিট নিয়ে গড়ি চক্রকুল
সন্ধ্যা নামলেই প্রেতের কথোপকথন,
শস্য খেতের ভেতর যাবনিক মৈথুন
আবারো স্বপ্নরেখারা এঁকে দিয়ে যায় কংক্রিট হয়ে দেয়ালজুড়ে
যখন তোমার শীতল সোঁদামাটিরা পুরান গ্রাফিতি হয়ে
বর্শা বিধায় অন্ধ অরণ্যে।
শীতজ্বর
জাম্বুরার পাতায় কুয়াশার ফোঁটা
ঠান্ডা হাওয়া মেঝের বক্ষে আঘাত,
ভেজা তৃণে আঙুল, শুকনো বুকে
হেঁটে যায় হেমন্তের ধানপোকারা।
বালিশের পিঠে শরীরের তাপজ্বর
সূর্যের মুখ, ভেসে থাকা কুয়াশায়
বৈকালবিলাস চুমুক টানে গরম চায়ে,
ফিরে আসা সন্ধ্যারা বদলাতে থাকলে
বারান্দায় পায়ের পাতার শব্দের রাতে
নাকে গরম জল বেয়ে শীতজ্বর নামে।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন