আমার চেনা ভয় ও অন্যান্য কবিতা
শব্দের আগুনে
শব্দের আগুনে
যে উষ্ণতা তোমাকে দিতে চাই
তা যেন এখন শীতের বরফের মত
বৃষ্টি হয়ে নামে।
দু-হাতে ছুঁয়েছি নদী, ভাটির টান
ভগ্নপ্রায় ঢেউ
বিলীন হয় শরীরের খাঁচায়।
রামধনুর সাত রং শব্দের আগুনে দলছুট।
শব্দের আগুনের আঁচ পেতে
মাঝে মাঝে মৃত্যু উঠে বসে
আচমকা ঘাসফুল উৎসবে মাতে।
ভয়
এখন ভয় জন্ম নেয় যৌবনের উপবনে
ঘর গৃহস্থালি বহমান বাতাস
ভালবাসার পাপড়িগুলোকে মৃত্যু দণ্ড দেয়।
জানলার পাশে নদী থিতু হয়ে বসে আছে
তার বেঁচে থাকার সব শর্ত কেড়ে নিয়েছে মানুষ
নিসর্গ মানুষ এখন মাতৃহারা শিশু, শুধু বৃষ্টিপাত চায়।
ধোঁয়ার কুণ্ডলীতে নিবিড় হতে পারছে না গাছ
অন্তরের বর্ণমালা আকাশে ছড়িয়ে যেতে চায়
পারে না, ঘোর লাগা সুর উতল হাওয়ায়
এখন আর ডানা মেলে না।
দুপুর
আমাদের জনপদে এখন অবিরাম দুপুর
শিল্পময় দুপুরে কোন যন্ত্রণা নেই
আকাশের চোখের দিকে চেয়ে আছে চোখ।
দুপুরে আমাদের রমণীয় নদী উসখুস করে
দুপুরে প্লাবিত নারী কখন হয়ে ওঠে চন্দ্রমল্লিকা
দুপুরে আমাদের দীর্ঘশ্বাস চোরাবালিতে ডুবে মরে।
আঁচল বিছিয়ে দুপুর এখন মাটিতে শুয়ে আছে
দুপুর চিক চিক করে কাগজকুড়ানি মেয়ের শরীরে
বনজ যত্ন চেয়ে দুপুর এখন মৃদুপায়ে ঘরে ঢুকতে চায়।
এখন ময়দানে
দুপুর বেলা বাতাস
ঘর থেকে বাইরে গেল
ভাসিয়ে নিয়ে গেল ঘরের মেঘগুলো।
এখন ময়দানে অঢেল রোদ
ছায়া এবং পুরোনো বিশ্বাস।
ঘরে সঙ্গমের আয়োজন
বিপুল বালিশের শরীরে আকাশ
মুখে আদিমতার মাটি ঘাস
এখানে উপোসী ঈশ্বর
ভালবাসার ফুল নিতে আসে না।
আমার চেনা ভয়
আমার চেনা ভয়
আমাকে পরিপূর্ণ হতে দেয় না।
মাঠে জমে থাকা মেঘের মধ্যে
বৃষ্টির হাওয়া ঝুপ করে বসে পড়ে
আমি বেসামাল হয়ে সব গল্প
হারিয়ে ফেলি।
বাতাসে গাছেরা মাতাল হলে
পাহাড়ের গায়ে আটকে যায়
রবীন্দ্র স্বরলিপি।
আমার ভেতরকার নান্দনিক আলোটা
কেঁপে কেঁপে ওঠে
অনেক সময় নিভেও যায়।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন