বিস্ফার ও অন্যান্য কবিতা

অ+ অ-

 

বিস্ফার

আমি চিরদিন থেমে যাই
পথ বেঁকে গেছে লোকালয়ের দিকে 

এখানে পুষ্পগন্ধ, ধুলাহীন শ্রী

বহু কথা শেষে যখন আর পোষায় না
থেমে যাই লাবণ্যের কিনারে;

নাক ডুবিয়ে নিতে পারি ঘ্রাণ
 
চোখে এতো আলো-জ্যোতিষ্ক কোনো 
ফুরায় না দেখা, ফুরায় না বিস্ময়

ঘূর্ণনের অবিরাম নিয়মের ভিতরে
স্থবির হয়ে থাকি;

রঙের বিস্ফার চতর্মুখে, 
থমকে থমকে যাই।


বিষাদ

একটা নীল জোনাকি, নিভে যেতে চাইছে। 

সন্ধ্যায় পুরানা রাস্তায় তোমার নাম পড়ি।

গল্প ফুরায় না কখনো। ঝোপ থেকে সে মৃদু আলোটাই কেবল উবে যায়। 

মানুষ বেহালা হলে আমি তার বিষাদটুকু নিয়ে তড়পাই।


মেহমান

আমি তোমার মেহমান 
এই পথের সরাইখানায়

বহু হেঁটে মনে হয় 
মুসাফির-ই পরিচয় 

তোমাদের স্মৃতির বাগানে 
থরে থরে সাজানো পাতার পাথারে

একটা ডুবোফুল
আবডালে হেসেছিল কোনো মওসুমে।

 

আগন্তুক

রাস্তাটাকে বরাবর সোজাই জেনে এসেছি;

তবু এতো ক্রসিং পেরোতে হয়!

প্রতিটা মোড়েই আলাদারকম গাছ, ভিন্নরকম ফুল। 

রঙ দেখেই চোখ ফেরানো দায়

চিনতে পারি না আপনা লোক,
এমনভাবে হাঁটি যেন আগন্তুক।


মৎস্যগন্ধ্যা

রাত ছড়ায়া আছে বনভূমির কিনার ঘেঁষে 

মাছ বোঝাই নৌকা দুলতে দুলতে 
আমাদের তন্ত্রীতে এসে পৌঁছাল

আঁশটে গন্ধে ঘোলা জোছনা 

ঝিরিঝিরি শব্দে-ঘ্রাণে
বহুকাল হলো তন্দ্রায় মরে গেছি 

ভাতের সাদা রঙে আমার চোখ 
ফোটা ফুলের মতো
 
ভোক লাগে না যেন আর মৎসাগন্ধ্যা
এই দরিয়ার কিনারে

কাদায় মাছের মতো তীব্র ও স্থির 
কোনো সন্ধ্যা আমার ভিতরে গেঁড়ে আছে।