একা রোদের ঘরে ও অন্যান্য কবিতা
অহম
সকাল ঝরছে বাইরে। জানালায়।
রাতের দেয়াল। ঠেস দিয়ে বহুকাল।
আলোর খবর। কাগজ ফুলের ডালে ডালে।
অমৃত কাল। আপসের দিন ফুরায়।
শ্মশানে ঠাঁই হলো তার।
দুপুর ঝরছে ভিতরে। করমচা গাছে দোয়েল।
পৈতা খসে গেছে। হৃদয় ব্রাহ্মণের।
অনাবৃত বসন নারী। কবি লিখে মানিক।
উনুনে জ্বলে আগুন। মাছের তরকারি।
ছাই হলো সব কবিতা।
রাত ঝরছে ঘরে। মান্দার ঘাছে ভূত।
মাছ নিয়ে গেছে চিলে। কী অদ্ভুত!
একা রোদের ঘরে
পরিত্যক্ত দূরের বাতিঘরে
দাঁড়িয়ে থাকাটা শুধু অনুবাদ
অথচ কালো মোষ চুলগুলো
আলতো ছুঁয়ে যাওয়া রোদে
শরীরকে দিয়েছে ক্লান্তি
কী হতো এমন ভালোবাসা না হলে
যে পুরুষ পরিত্রাণ নয়,
সে কেবল অনাগত বেদনা
পৃথিবীর কোথাও কী রয়েছে কেউ ভাঙা সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে একা রোদের মধ্যে পাশ কাটিয়ে যায় যার
পা আর অলিন্দ—
তবে কারা ভালোবাসে!
অপেক্ষা
মন খারাপ করা সন্ধ্যা। কিশোরীর ঘুম ভাঙার পর আশ্বিনের জীর্ণ মাঠে বসে আছে বিষণ্ন কাক! চাইলেই পাইত সহস্র জ্যোতিকা, কেবল অনুগ্রহ কার অলংকার হয়! মাঘের আবহে রোদ মরে গেছে গোয়াল ঘরের বারান্দায়! অযথা আপাতত! সন্ধ্যায়ই বিগত যৌবন নিজেরে মনে হয়! অনির্বাণ,—খোলস নিলেই যদি মিলে যায় বাঘবন্দি আমরা তবে কোনোদিন অপেক্ষায় রইতাম না!
মরে গেছে বালিহাঁস
এইসব সন্ধ্যারা সব মরে গেছে
বিলের জলে ডুবে গেছে
সদ্য ব্যাঙের ছানা ছায়া কেটে গেছে
নিজের অবেলায় পশ্চিমে চলে গেছে
ওবেলার ধুলো
সব ফিরে আসার নেই কোনো বাহানা
ডুবে যাচ্ছি জলের ভিতর
জলের শরীর ছুঁইছি আমি
বাসা ভেঙে যাচ্ছে বাবুই পাখির
চোখ জানছে নাই সীমানা
যদি গোধূলি দেখো আমারে ছাড়া
বিলাপ জানবে আকাশ করছে
ইশানে দেখলে মেঘের বাড়ি
আমার নামেই বৃষ্টি নামবে…
যদি জলে ডুবাও পা
মাছের ঘরে কেরায়া নৌকায় লাশ
দূরের বনে কালিগঙ্গার ঢেউ
উড়বে বুনো বালিহাঁস
পালের হাওয়ায় জ্বলছে যে জীবন
ওড়ার শিল্প জানে না সে
যদি রাত নামে নদীর শেষে
পাচ্ছো কেবল জলের শব্দ
নামছে যেন নর্তকী এমন
ভাঙছে সিঁড়ি অনবরত
যদি ডুবে যাচ্ছো যাচ্ছো ডুবে অবিরন্ত ডাকছে কেও পদ্ম পাতার নীরব ডাকে
ভিজছে জানবে জলের ঢেউ আমার মতো দুর্বিপাকে...
পরস্পর
তোমার উপস্হিতি জানায় উৎসব
আমাদের উপস্হিতি জানায় ছুঁয়ে দেখা পরস্পর
কপটতা পিষে চিনে রাখি আমিকে
এসব অনবদ্য খেলায়
পরস্পরতার প্রহর চলে
উপযুক্ত শরতে নির্বাসিত হয় দিন;
প্রতিদিন ভাবি চিঠি লিখবো
ঘুমাচ্ছন্ন চোখ মরে গেলে আর কে কথা রাখে বলো!
নিজের প্রয়োজনেই না এতদিন বেঁচে থাকা!
আমরা কেবল প্রয়োজনেই প্রিয়তম।
অসাধারণ প্রিয় ভালোবাসার মানুষ আমার দিদি বিশেষ করে পরষ্পর। তোমার শক্ত শব্দভাণ্ডার যদিও অনেক সময় দিয়ে খুঁজতে হয়।তবু্ও হালের কবিতা বলতে তোমাকেই খুঁজি। শুভকামনা রইল
Omar Mia
নভেম্বর ০২, ২০২৪ ১৩:৫৬
সাবলীল শব্দবিন্যাস। চমৎকার কবিতা।
জিয়া আরেফিন আজাদ
নভেম্বর ০১, ২০২৪ ২০:২৮