রসমালাই ও অন্যান্য কবিতা

|| কুয়াশায় ||
শীতের নদীর মতন শান্ত হয়ে আছি
চারপাশে এত কুয়াশা
বুঝতেও পারবা না কেউ
কতটা খোয়া ঝরলো নদীতে
আর কত ঢেউ
বুকে লয়ে
ঘুমায়ে গেছি
শীতের নদীর মতন শান্ত হয়ে আছি
|| বিকালের নয়নতারা ||
হুদাই একটা বিকাল কাটায়ে দিব তরকারি গরম করে করে
রাইতের ভাত আরেক চুলায় ফুটবে টগবগ
জানলায় চোখ পড়লে দেখব লাউয়ের ডগায় ফুল আইছে
পুঁইয়ের লতাগুলা উঠে পড়ছে মাচায়
রাজমিস্তিরিরা আড্ডা দিতেছে পাশে
আর নয়নতারা তখনও ফুটে থাকছে
পাশের বারান্দায়
|| আপন ||
দুয়েকটা টবে অল্প কিছু মাটি
মাঝে মাঝে ছুরি দিয়ে কোপাই
বীজ বুনি, গান গাই
কখনো তরকারির খোসা, চাল ধোয়া পানি একলগে পচাই
মাটির লগে মিশাই, মিশে মিশে আরো মাটি হয়
মাটির কাজই এমন, যারে পায় আপন করে নেয়
মাটির কাছাকাছি রাখি নিজেরে
আপন লাগে
মাটিতে বীজ পড়লে যেমন গাছ হয়ে ওঠে
আমিও চাই গাছ হয়ে যেতে
ঢাকা শহরের গাছ
|| সরিষাক্ষেতে ||
আমি তো রগেরগে চিনি তাদেরকে
তাও হাসিমুখে যাইতাম চাই
যেন সরিষাক্ষেতে
হলুদ হলুদ ফুলের মত
ঝকঝকা আত্মীয়রা
আমার অপেক্ষায়
আমি গেলে তারা ঝরঝরা কথায়
জমানো মধু খাওয়াইবে আমারে
তাই এত খোয়া বিছায়ে ডাকে
|| উলালে ||
কী সুন্দর হাসি হাসি মুখ করে কথা বলতেছি
আহারে! আহারে!
যেন মাত্রই বিষ্টি হইলো
আর মাত্রই রইদে চকচকা উঠানে ঝাড়ু দিতে আসলাম।
কাঠবাদামের ফুল রেণু রেণু
পড়ে আছে কাঁচা আম আর
কচি পাতার দল এখানে ওখানে।
একপাশে শুকনা পাতা মেলে দিয়ে
ঝকঝকা উঠানে
এখন লাল লাল মরিচ শুকাইতে দিবো রে!
মুগ আর খেসারীও দিবো কিছু
আর কিছু খাইশ্যা
আলাদা আলাদা বিছানে।
বিষ্টিতে ওদানো কাপড়ও
মেলতে হবে দড়িতে।
ওরে, অনেক রইদ রে আজকে উঠানে!
উলালে আমি ভুলেই গেছি কী ছিল যে মনে…
|| রসমালাই ||
খুব কম কথার ভিতরেই আমি থাকতে চাই
তাকালেই বুঝে যাবা এমন সহজ হবে প্রতিটা কদম
যেরকম গ্লাসভরা পানি নিয়ে হাঁটতে থাকা তোমার ভীরু পা
যেন আমার দিলের উপর এমনভাবে রাখলা
যাতে ব্যথা না পাই, পানিতে না ভিজে যাই
এমনই দরদে আগলায়ে রাখবা
বুঝিবা কাঁচের গ্লাস
পড়লেই ভেঙ্গে যাবো
আর চোখ বড় করে তাকাবো। তাতেই
তুমি কানবা আর গালে গাল ঘষবা
হুমম, আম্মুর ননাই!
মিস্টার রসমালাই!
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন